ভারতীয় বাজারে এখন প্রতিদিন নতুন নতুন বাইক লঞ্চ হচ্ছে। বাইকের কোম্পানিগুলোর জন্য ভারতীয় মার্কেট একটা দারুন লাভজনক মার্কেট হয়ে উঠেছে। ভারতীয় অটোমোবাইল শিল্প বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম একটা শিল্প। দুই চাকার যানবাহন ভারতে প্রচুর মানুষ ব্যবহার করেন এবং সেই কারণেই বিশ্বের শীর্ষ মোটরসাইকেল নির্মাতাদের মধ্যে কয়েকটি কোম্পানি ভারতীয়। বিভিন্ন বিভাগে বাইকের চাহিদা রয়েছে ভারতীয় বাজারে। এই ২০২৪-২৫ সালে ভারতীয় বাজারে আসবে বেশ কয়েকটি নতুন বাইক, যেখানে আপনারা এন্ট্রি লেভেল থেকে শুরু করে একেবারে প্রিমিয়াম রেঞ্জের বাইক দেখতে পাবেন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক এই বছর কোন পাঁচটি বাইক ভারতীয় বাজারে ঝড় তুলতে আসছে।
এই বাইকটি Hero Xpulse 200 এর বৃহত্তর ভার্সন হতে চলেছে। এই বাইকে আপনারা পেয়ে যাবেন দুর্দান্ত অফরোডিং ক্ষমতা। karizma xmr 210 এর মতই একই ইঞ্জিন নিয়ে হিরো কোম্পানির এই নতুন বাইকটি লঞ্চ করবে ভারতে। এই বাইকে আপনারা দুর্দান্ত পারফরম্যান্স আশা করতে পারেন। এলইডি ইন্ডিকেটর, এলইডি টেল লাইট, এলইডি টার্ন ইন্ডিকেটর, ইউএসডি ফর্ক পাওয়া যাবে এই নতুন বাইকে। এটি হতে চলেছে একটি অ্যাডভেঞ্চার মোটরসাইকেল। যদি আপনাদের বাজেট টাইট থাকে, তাহলে আপনারা অবশ্যই এই বাইকটি পছন্দ করতে পারেন অফ রোডিং এর জন্য। দুর্দান্ত পারফরম্যান্স আপনারা পাবেন এই বাইকে।
কাওয়াসাকি কোম্পানির এই নতুন বাইকটি হতে চলেছে একটি এডভেঞ্চার বাইক যা দীর্ঘ পথে ভ্রমণ করার জন্য দারুন প্রমাণিত হতে পারে। এই বাইকে আপনারা পেয়ে যাবেন ২৯৬ সিসি লিকুইড কুল প্যারালাল টুইন ইঞ্জিন, যেটি ৩৯ বিএইচপি ক্ষমতা তৈরি করতে পারে। হালকা ওজন এবং উচ্চ গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্সের কারনে আপনারা যে কোন জায়গাতে এই বাইক চালাতে পারবেন। বিশেষত এডভেঞ্চার ক্যাটেগরিতে যারা বাইক কিনতে পছন্দ করেন তাদের জন্য এটা সবথেকে ভালো বাইক হতে পারে। এই বাইকটি প্রিমিয়াম ক্যাটাগরির বাইক। এই বাইকটি আরামদায়ক রাইডিং পজিশন আপনাকে প্রদান করে থাকে। দীর্ঘ সময়ের জন্য যদি আপনি বাইক চালাতে চান তাহলে আপনি আরামদায়ক অনুভূতি পাবেন। অফরোডিং এর ক্ষেত্রে এটা একটা ভালো বাইক হতে পারে।
বেনেলি কোম্পানির এই নতুন বাইকটি হলো একটি নেকেড স্পোর্টবাইক যা ৩০০ সিসি প্যারালাল টুইন ইঞ্জিন দিয়ে চালিত। এই বাইকটি ৩৮ বিএইচপি ক্ষমতা এবং ২৫.৬ নিউটনমিটার টর্ক তৈরি করতে পারে। এর স্টাইলিং অত্যন্ত ক্লাসিক এবং ডিজাইন খুব আকর্ষণীয় হতে চলেছে। যুবক রাইডারদের জন্য এই বাইক একেবারে আদর্শ বাইক। তবে এই বাইকের সব থেকে বড় ফিচারটা হল এর শহুরে রাইডিং এক্সপেরিয়েন্স। সবদিক থেকে এই বাইকটি হ্যান্ডেল করার সহজ। তবে এই বাইকের ওজন বেশি। তাই দীর্ঘ দূরত্ব ভ্রমণের জন্য খুব একটা ভালো নয়। এই বাইকে যদি আপনি ভালো এক্সহস্ট লাগাতে পারেন, তাহলে এটা পুরো সেগমেন্টের সবথেকে সুন্দর বাইক হতে পারে।
এই ভাইকে আপনারা পেয়ে যাবেন একটি ক্লাসিক স্ক্র্যাম্বলার ডিজাইন। এছাড়াও আধুনিক প্রযুক্তির সংমিশ্রণে এই বাইকটি আপনাকে একটা দারুন আউটপুট দিতে পারে। এই বাইকে আপনারা ৪৭১ সিসি প্যারালাল টুইন ইঞ্জিন পেয়ে যাবেন। এই ইঞ্জিনটি ৪৬ বি এইচ পি পাওয়ার এবং ৪৩ নিউটন মিটার টর্ক তৈরি করতে পারে। এই বাইকের গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স খুবই বেশি এবং হ্যান্ডেল বার অনেকটা চওড়া। ফলে রাইডিং অত্যন্ত আরামদায়ক হতে পারে আপনার। বিশেষ করে অমসৃণ রাস্তায় এই বাইক আপনাকে একটা ভালো অভিজ্ঞতা দেবে। চমৎকার বিল্ড কোয়ালিটি এবং রেট্রো লুক আপনার রাইডিং এক্সপেরিয়েন্স ভালো করবে। তবে এই বাইকের দাম কিন্তু HONDA কোম্পানির অন্যান্য বাইকের থেকে বেশি হবে।
রয়েল এনফিল্ড এখন ভারতীয় বাজারের সবথেকে বড় বাইক নির্মাতা কোম্পানির মধ্যে একটি হয়ে উঠেছে। প্রতি মাসে নতুন নতুন বাইক লঞ্চ করে ভারতীয় বাজারে নিজের একটা আধিপত্য তৈরি করেছে রয়েল এনফিল্ড কোম্পানি। আর এবারে ভারতে আসতে চলেছে তাদের নতুন বাইক Royal Enfield scram 450। এই নতুন বাইকে আপনারা ৪৫০ সিসি সিঙ্গেল সিলিন্ডার ইঞ্জিন পেয়ে যাবেন। এই ইঞ্জিনটি ৪০ বিএইচপি ক্ষমতা নিয়ে আসতে চলেছে। এই ইঞ্জিনটি আপনারা এর আগেও দেখেছেন। রয়েল এনফিল্ড কোম্পানির ৪৫০ সিসি বাইকে সাধারণত যে ইঞ্জিন দেওয়া হয়, সেই একই ইঞ্জিন আপনারা এখানেও পাবেন। মজবুত বিল্ড এবং অফ রোড়িং ক্ষমতার জন্য রয়েল এনফিল্ড কোম্পানির এই বাইকটি রাইডারদের জন্য আকর্ষণীয় হতে পারে। স্টাইলিং এর দিক থেকে রয়েল এনফিল্ড নিজের রেট্রো স্টাইল দেবে এই বাইকেও। ফলে যারা এই ধরনের রেট্রো স্টাইলের বাইক পছন্দ করেন, তাদের জন্য এটা একটা দারুণ অপশন হতে চলেছে। তবে হ্যাঁ, এখানে একটা বিষয় বলে রাখা ভালো, রয়েল এনফিল্ড কোম্পানির অন্যান্য বাইকের তুলনায় কিন্তু এই বাইকের ওজন একটু হলেও বেশি হবে। তাই সেই দিকটা মাথায় রেখে বাইক কেনা উচিত।