করিনা কাপুর খান (kareena Kapoor khan)—এর কোল আলো করে জন্ম নিয়েছে কনিষ্ঠ পুত্রসন্তান। চিকিৎসক পতৌদি বংশের চতুর্থ বংশধরের জন্মের সম্ভাব্য তারিখ দিয়েছিলেন 15 ই ফেব্রুয়ারি। কিন্তু 20 শে ফেব্রুয়ারি রাতে মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন করিনা। অবশেষে 21 শে ফেব্রুয়ারি জন্ম নিল সইফ (saif Ali khan) ও করিনার পুত্রসন্তান। অনেকেই করিনাকে নর্মাল ডেলিভারির কথা বললেও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সি-সেকশন পদ্ধতিতে কনিষ্ঠ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন বেগম পতৌদি। এর আগে তৈমুরের জন্মের সময় গর্ভস্থ সন্তানের মাথার অবস্থান সঠিক না থাকার কারণে চিকিৎসকরা ঝুঁকি না নিয়ে করিনার সিজার করতে বাধ্য হয়েছিলেন। তবে এবার নবজাতকের অবস্থান ঠিক থাকলেও চিকিৎসকরা করিনাকে ‘সি-সেকশন’ ডেলিভারির পরামর্শ দিয়েছিলেন। পতৌদি পরিবারের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, মা ও সন্তান দুজনেই সুস্থ আছেন। ছোট্ট তৈমুর এখন দাদা। সে মাস্ক ও স্নিকার্স পরে হাসপাতালে গিয়ে দেখে এসেছিল তার ভাইকে। এবার তার উপর বর্তাল মা ও ভাইকে বাড়িতে নিয়ে আসার দায়িত্ব। অবশ্য সে একা ছিল না, সঙ্গে ছিলেন তার বাবা সইফ। 23শে ফেব্রুয়ারি করিনা ছাড়া পেলেন হাসপাতাল থেকে। করিনা, তৈমুর ও সইফ এবং তাঁদের পরিচারিকা হাসপাতাল থেকে বেরোনোর সময় পাপারাৎজিদের নজরে আসেন করিনা এবং পরিচারিকার কোলে নবজাতক। কিন্তু কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই করিনা ও তাঁর পরিচারিকা নবজাতককে কোলে নিয়ে হাসপাতালের সামনে রাখা গাড়িতে উঠে দ্রুত বেরিয়ে যান। গাড়ির কাঁচের মাধ্যমে দেখা যায় গাড়ির ভিতরে সামনের সিটে বসে রয়েছেন সইফ ও তৈমুর। পিছনের সিটে ছিলেন করিনা, পরিচারিকা ও তাঁর কোলে নবজাতক। যথারীতি নবজাতকের মুখ দেখা যায়নি। রণধীর কাপুর(Randhir kapoor), ববিতা (babita), করিশমা কাপুর (karishma kapoor) এবং করিশমার কন্যা সামাইরা (samaira) মুম্বইয়ের বিখ্যাত মাউন্ট মেরি চার্চে প্রার্থনা করেছেন করিনা ও নবজাতকের জন্য। রণধীর কাপুর অত্যন্ত আনন্দিত দ্বিতীয় নাতিকে পেয়ে। তিনি জানিয়েছেন, নবজাতকের মুখের আদল তার দাদা তৈমুরের মতো। করিনার খুড়তুতো বোন রিধিমা কাপুর (Ridhdhima kapoor), ফ্যাশন ডিজাইনার মণীশ মালহোত্রারা ইতিমধ্যেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ‘সইফিনা’-কে। কাপুর ও পতৌদি পরিবারের তরফে এবার প্রকাশ করা হবে না নবজাতকের ছবি। করিনা ও সইফ জানিয়েছেন, আপাতত তাঁরা তাঁদের পরিবারের নতুন সদস্যকে মিডিয়ার থেকে দূরে রাখতে চান।
তবে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে আন্তর্জাতিক নারীদিবসের দিন করিনা তাঁর কনিষ্ঠ পুত্রসন্তানের ছবি ইন্সটাগ্রামে শেয়ার করে লিখেছেন, একজন মহিলা সর্বশক্তির সমন্বয়। করিনার শেয়ার করা ছবিটি সাদা-কালো। তবে করিনা নবজাতককে কোলে নিয়ে তার মুখ আড়ালেই রেখেছেন। নেটিজেনরা করিনাকে আন্তর্জাতিক নারীদিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সম্প্রতি পরিস্থিতির অনেকটাই পরিবর্তন ঘটেছে। চলতি বছরে করোনা অতিমারী আবারও ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠছে। ফলে মহারাষ্ট্র তথা মুম্বইয়ের একাংশে আংশিক লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে নবজাতককে নিয়ে মিডিয়ার সামনে আসার অর্থ সংক্রমণের ঝুঁকি নেওয়া। ফলে সেই পথে হাঁটতে চান না ‘সইফিনা’। এই কারণে ঘরে বসেই জুনিয়র পতৌদির সঙ্গে সকলের পরিচয় করানোর জন্য হয়তো তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়াকে বেছে নিয়েছেন বলেই অনেকের ধারণা।
কিন্তু জুনিয়র পতৌদির জন্মের একমাস পেরোতে না পেরোতেই ‘সইফিনা’-র ঘরে এল আরও এক নতুন অতিথি। সম্প্রতি একটি সাদা রঙের মার্সিডিজ এসইউভি কিনেছেন সইফ। ফলে গাড়িটির টেস্ট ড্রাইভের জন্য বাড়ির বাইরে এসেছিলেন সইফ ও করিনা। নীল রঙের প্রিন্টেড কাফতান পরেছিলেন করিনা। অপরদিকে সইফের পরনে ছিল গ্রে রঙের ডেনিম ও সাদা টি-শার্ট। করোনা বিধি মেনে দুজনের মুখেই ছিল মাস্ক। সইফ ও করিনার টেস্ট ড্রাইভের ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
আপাতত নেটিজেনদের জল্পনা শুরু হয়েছে জুনিয়র পতৌদির নাম নিয়ে। চার বছর আগে তৈমুরের জন্মের পর সইফ চেয়েছিলেন ছেলের নাম হোক বিখ্যাত পাক কবি ফৈয়াজ আহমেদ (Faiyaz Ahmed)-এর নামে। কিন্তু করিনা তাঁকে বলেন ‘তৈমুর’ নামটি রাখতে কারণ ‘তৈমুর’ শব্দের অর্থ দৃঢ়। করিনা চেয়েছিলেন, তাঁর সন্তানের চরিত্রে দৃঢ়তার প্রকাশ ঘটুক। কিন্তু সইফ তাঁকে বলেছিলেন, অনেকেই ‘তৈমুর’ নামের অর্থ না বুঝে কুমন্তব্য করতে পারেন। কিন্তু করিনা তাঁর সিদ্ধান্তে অটল থেকে নবজাতকের নাম দিয়েছিলেন ‘তৈমুর’। তবে সত্যি হয়েছিল সইফের আশঙ্কাই। অনেকেই মনে করেছিলেন অত্যাচারী শাসক তৈমুর লঙ-এর নামে হয়তো করিনা নবজাতকের নাম ‘তৈমুর’ রেখেছেন। তাই শোরগোল পড়ে গিয়েছিল নেটদুনিয়ায়। এমনকি নেটিজেনদের একাংশ নবজাতক ‘তৈমুর’-এর মৃত্যু কামনাও করেছিলেন। সেই সময় করিনার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁর কাকা ঋষি কাপুর (Rishi kapoor)। তাঁর প্রতিবাদ নেটিজেনদের নিয়ন্ত্রিত করেছিল। কিন্তু আজ তিনি নেই। করিনা কি এবার মেনে নেবেন সইফের সিদ্ধান্ত? অপেক্ষায় নেটিজেনরা।
চলতি মাসেই বান্দ্রার ‘সদগুরু স্মরণ’ নামে বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে বসবাস শুরু করেছেন সইফ, করিনা ও তাঁদের প্রথম সন্তান তৈমুর। করিনা ও সইফের পুত্রসন্তান তৈমুরকে নিয়ে ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা ভাবিত করছে পতৌদি পরিবারকে। এই মুহূর্তে সইফ ও করিনার কনিষ্ঠ পুত্রসন্তানকে নিয়েও চিন্তিত তাঁরা। তৈমুর জন্মগত ভাবে স্টারকিড হলেও তার পরিবার পছন্দ করেন না, তৈমুরের উপর পাপারাৎজির নজর থাকুক। কিছুদিন আগেই করিনা কপূর খানের টক শো ‘হোয়াট উইমেন ওয়ান্ট’-এ এসে তৈমুরের ঠাকুমা অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর ((sharmila tagore) বলেছিলেন, তিনি চান বিরাট কোহলি (virat kohli)ও অনুষ্কা শর্মা(Anushka sharma)- র সন্তান তাড়াতাড়ি পৃথিবীতে আসুক। তাহলে অন্ততঃ তৈমুরের উপর পাপারাৎজির নজর কিছুটা কমবে। শর্মিলার কথায় সম্মতি জানিয়েছেন করিনাও। কিন্তু বিরাট-অনুষ্কার কন্যাসন্তান ভামিকা (vamika)-র জন্মের পরেও তৈমুরের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি। পতৌদি পরিবার চান, তৈমুর একটি সাধারণ শিশুর মতোই বেড়ে উঠুক। পাপারাৎজির ক্যামেরা তার শৈশবকে বিঘ্নিত করছে বলে মনে করেন তাঁরা।