শ্রেয়া চ্যাটার্জি : নববর্ষ মানেই দেদার সেলিব্রেশন। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, মজা, হুল্লোড়, পরিবারের সঙ্গে পিকনিক। সারা বছরের দুঃখ, বেদনা কে বাক্সের মধ্যে বন্দি করে রেখে, নতুন করে বরণ করে নেওয়া নতুন বছরকে। রাত বারোটা বাজতে না বাজতেই আতসবাজি এবং শব্দবাজি তে নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়া। কিন্তু এই দিনটি আমাদের বাঙ্গালীদের কাছে আরও একটি কারণে বিশেষ বিখ্যাত। বেলুড় মঠ, কাশীপুর উদ্যানবাটী, দক্ষিণেশ্বরে আজ ভক্তের সমাগম হয়। কেননা বছরের প্রথম দিনটিতে শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব কল্পতরু হয়েছিলেন। আজ কল্পতরু উৎসব।
১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম দিন সেখানেই কল্পতরু হলেন রামকৃষ্ণ। এদিন রামকৃষ্ণদেব বলেছিলেন ‘সবার চৈতন্য হোক’। কাশীপুর উদ্যানবাটী, দক্ষিণেশ্বর, বেলুড়মঠ সমস্ত জায়গাতেই কল্পতরু উৎসব পালিত হয়। বছরের প্রথম দিনটিতে ভক্তের ঢল নামে এই সমস্ত জায়গায়। এই উৎসব ইচ্ছেপূরণের উৎসব। কাশিপুর উদ্যানবাটি তে বিশেষ পূজা পাঠের ও আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন : বছরের শুরুতেই কলকাতার এই মন্দিরগুলো থেকে ঘুরে আসুন
১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে ঠাকুরের গলায় ক্যান্সার ধরা পড়ে। তাকে শারীরিকভাবে সুস্থ করে তোলার জন্য হাজার ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে ১১ ই ডিসেম্বর তাকে স্থানান্তরিত করা হয় কাশীপুরের এক বিরাট বাগানবাড়িতে। সেখানেই পয়লা জানুয়ারি তিনি নিজেকে কল্পতরু হিসেবে ঘোষণা করেন।
কল্পতরু হওয়ার আগের মুহূর্তে ঠাকুর বলেছেন তোমাদের চৈতন্য হোক এবং ওখানে থাকা সমস্ত ভক্তদের গায়ে হাতে পায় তিনি হাত বুলিয়ে দেন এবং তাতে ভক্তরা অদ্ভুত ঐশ্বরিক ছোঁয়া অনুভব করেন। যা তৎক্ষণাৎ ভক্তদের দুঃখ-দুর্দশা কে অনেকটা কমিয়ে দেয়। তাই এই দিনটিতে মানুষেরা বিশ্বাস করেন সমস্ত দুঃখ দুর্দশা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে, এই এইটুকু বিশ্বাস এর আশাতেই তারা হাজির হন দক্ষিণেশ্বর, বেলুড়মঠ এবং কাশীপুর উদ্যানবাটী তে।