গত বুধবার ব্যাঙ্কশাল আদালত প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের জামিন খারিজ করে দিয়ে আজ অর্থাৎ শুক্রবার অব্দি ইডিকে হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সময় দেয়। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি এবং সেইসাথে সম্পর্কিত প্রচুর নগদ টাকা উদ্ধার প্রসঙ্গ নিয়ে এবার গতকাল বৃহস্পতিবার পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আর জেরার মুখে পার্থবাবু দাবি করেন তিনি অর্পিতাকে তেমনভাবে চেনেন না। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর এই চাঞ্চল্যকর দাবি ঘিরে উত্তাল গোটা রাজ্য রাজনীতি।
আসলে গতকাল বৃহস্পতিবার পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করেন ইডি আধিকারিকরা। প্রথমেই প্রাক্তন মন্ত্রীকে অর্পিতারকে দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, “আপনি কি এনাকে চেনেন?” উত্তরে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “না তেমনভাবে চিনি না।” এরপর ইডি জানতে চায়, “তাহলে কিভাবে চেনেন?” উত্তরে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মাঝে মাঝে দেখেছি। অনেকেই তো আসতো।” এরপর ইডি প্রশ্ন করে, “উনি কি আপনার খুব ক্লোজ?” প্রশ্নের উত্তরে পার্থবাবুর সটান জবাব, “না”। এরপর ইডি জিজ্ঞাসা করে, “ওনার বাড়িতে অনেক টাকা পাওয়া গিয়েছে, আপনি জানেন?” উত্তরে পার্থবাবু বলেন, “শুনেছি।” তখনই ইডি সরাসরি প্রশ্ন করে, “এই টাকা কি আপনার?” জবাবে পার্থবাবু বলেন, “একদমই না।” “তাহলে কার টাকা?” প্রশ্ন তোলা হলে পার্থবাবু হেঁয়ালি করে জবাব দেন, “জানি না।” ইডি আধিকারিকরা এই গোটা জেরার ভিডিও রেকর্ডিং করে।
তবে পার্থবাবুর জিজ্ঞাসাবাদের উত্তর প্রসঙ্গে ইডির অভিযোগ, “তথ্যগোপন করার চেষ্টা করছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তথ্য প্রমাণ এক কথা বলছে এবং অন্যদিকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় অন্য কথা বলছেন।” আজ আবার পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে আদালতে পেশ করা হবে। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে আজ আদালতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এই তথ্য গোপনের চেষ্টার কথা জানাবেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময় ইএসআই হাসপাতালে প্রবেশের মুখে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে অর্পিতা মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন যে ওই টাকা সবটাই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। তার অনুপস্থিতিতে ফ্যাটে টাকা রেখে যেতে পার্থ চট্টোপাধ্যায় লোকেরাই। তবে অন্যদিকে আবার জেরার মুখে পড়ে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে ঠিকমতো চিনতেই অস্বীকার করেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এবার কে সত্যি বলছে সেটা অবশ্যই তদন্তসাপেক্ষ।