স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি চলাকালীন এবারে এজলাসেই কেঁদে ফেললেন জেলবন্দী রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আদালতে পাঠ্য বললেন, “আমাকে জামিন দিন, আমাকে বাঁচতে দিন।” যদিও এই সমস্ত অনুরোধের কোনো লাভ হয়নি। শেষমেষ পার্থকে আবারো ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক বিদ্যুৎ কুমার রায়।
১৪ দিনের জেল হেফাজত শেষে বুধবার আবারো ভার্চুয়াল মাধ্যমে আদালতে নিয়ে আসা হয়েছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায় কে। পাশাপাশি আদালতে নিয়ে আসা হয়েছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায় কে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের আবেদন করেছিলেন তার আইনজীবী। সেই সময় শুনানি চলাকালীন নিজের জামিনের প্রসঙ্গ উঠতে কান্নায় ভেঙে পড়লেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। যদিও শেষমেষ সেই আরজি শোনা হয়নি।
শিক্ষা ক্ষেত্রে কেলেঙ্কারির অভিযোগে গত ২৩ জুলাই গ্রেফতার হয়েছিলেন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিন দফার ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট হেফাজতের পর পার্থ এই মুহূর্তে প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি হয়েছেন। বুধবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে শুনানি চলাকালীন বিচারক বিদ্যুৎ কুমার রায় জানিয়েছেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায় চাইলে কিছু বলতে পারেন। সেই সময় বিচারকের উদ্দেশ্যে নিজের রাজনৈতিক জীবনের প্রসঙ্গ টেনে এনেছিলেন তিনি। বাবা বলে যখন তিনি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ছিলেন সেই সময়ের কথা বলতে শোনা যায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। আদালত সূত্রে খবর, বিচারককে তিনি জানিয়েছেন, তাকে তিন বেলা ওষুধ খেতে হয়। তার চিকিৎসার নিয়মিত প্রয়োজন রয়েছে। তদন্তকারীরা তার বাড়িতে ৩০ ঘণ্টা তল্লাশি চালানোর পরেও কিছু উদ্ধার করতে পারেননি। তারপরেও কেন তিনি জামিন পাচ্ছেন না সেই প্রশ্ন তুলতে দেখা যায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে।
তিনি এদিন বলেন, জেলবন্দি অবস্থায় তার চিকিৎসা ঠিকঠাক হলেও তিনি বিচার পাচ্ছেন না। আদালত সূত্রের দাবি, অনর্গল কথা বলার সময় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এছাড়াও শারীরিক পরীক্ষার জন্য তাকে যেভাবে জোকার ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সেই প্রসঙ্গ তুলে কেঁদে ফেলেছেন তিনি। অন্যদিকে বুধবার প্রত্যাশিতভাবেই পার্থ এবং অর্পিতা দুজনকে জেল হেফাজতে পাঠানোর আবেদন করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবীদের বক্তব্য, তাদের নামে বহু বেআইনি সংস্থার লেনদেনের হদিশ মিলেছে। এছাড়াও মিলেছে কিছু কাগুজে সংস্থার হদিস। তার মাধ্যমেই কালো টাকা সাদা করা হয়েছে বলে আদালতের দাবি করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এছাড়াও এখনো পর্যন্ত শতাধিক ব্যাংক একাউন্টের সন্ধান মিলেছে বলেও জানিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।