শ্রেয়া চ্যাটার্জি : হায়দ্রাবাদের একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এই অভূতপূর্ব ঘটনাটি ঘটিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের বোতল থেকে তিনি তৈরি করেছেন পেট্রোল। আমাদের পৃথিবী আজ জর্জরিত প্লাস্টিকের দূষণে। প্লাস্টিক যেহেতু পরিবেশবান্ধব নয় তাই মাটির সঙ্গে সহজে মিশে যায় না। আর যার ফলে যত বিপত্তি। মাটির নিচে প্লাস্টিকের একটা স্তর তৈরি হওয়ায় ভৌম জল তৈরি হতে পারছেনা, যার ফলে মাটির নিচে জলের ভান্ডার কমে যাচ্ছে। কিন্তু পৃথিবীকে একেবারে কয়েকদিনের মধ্যে পুরো প্লাস্টিক মুক্ত করে ফেলা সম্ভব নয়। প্লাস্টিক কে কিভাবে পুনর্ব্যবহার করা যায় এমন ভাবনা নিয়ে অনেকেই নানান রকম কাজ করছেন। কেউ প্লাস্টিক দিয়ে রাস্তা বানাচ্ছেন, কেউবা প্লাস্টিকের বোতল গুলিকে সুন্দর করে সাজিয়ে গাছ লাগানোর উপযুক্ত জায়গা তৈরি করছেন। কিন্তু প্লাস্টিকের বোতল থেকে পেট্রোল তৈরি? এটা সত্যিই একটা অবিশ্বাস্য ঘটনা, এই প্লাস্টিকের তৈরি পেট্রল প্রতি লিটার ৪০ টাকা করে বিক্রিও হচ্ছে। প্রফেসর সতীশ কুমার তিনটি পরপর ধাপ পেরিয়ে প্লাস্টিকের বোতল থেকে পেট্রোল তৈরি করার ব্যবস্থা করেছেন।
প্রায় ৫০০ কেজি প্লাস্টিক থেকে তৈরি করা যায় ৪০০ লিটার পেট্রোল। আর এটি তৈরি করতে কোন রকম জল ব্যবহার হয় না এবং এটি কখনোই কোন দূষিত জলকে তৈরিও করে না। এর ফলে বায়ু দূষিত হয় না। তার ফলে সব দিক থেকে এটি একটি পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতি। তার কোম্পানি প্রতিদিন ২০০ কেজি প্লাস্টিকের বিনিময় ২০০ লিটার পেট্রোল তৈরি করছেন এবং এই পেট্রল কাছাকাছি যে কারখানা আছে, সেখানে প্রতি লিটার ৪০ টাকা করে বিক্রি করেন। এটি সাধারণত শিল্পী বা কারখানাতেই ব্যবহার হয় তবে বর্তমানে এটিকে চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে এগুলো দিয়ে যানবাহনও চালানো যায়।
একসময় মানুষ নিজের উন্নতির জন্যই প্লাস্টিককে নিজেই তৈরি করেছিল। কিন্তু সে সময় মানুষ বুঝতে পারেনি যে প্লাস্টিক তার জীবনে এত বড় একটা অভিশাপ নিয়ে আসবে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্লাস্টিকের ব্যবহার এতটাই বেড়ে গেছে যে এটি ছাড়া আমরা ভাবতেই পারি না। প্লাস্টিকের তৈরি জিনিসপত্রের দাম অনেক কম তাই এটি সহজে মানুষ গ্রহণ করে নিয়েছে। কিন্তু প্লাস্টিক মুক্ত করতে না পারলে আমাদের বেঁচে থাকাটাই কঠিন হয়ে পড়বে। পৃথিবী আরো ধ্বংসের পথে চলে যাবে। প্লাস্টিকের এইভাবে পুনর্ব্যবহার করেও প্লাস্টিকের পরিমাণ অনেকটাই কমানো সম্ভব।