করোনাভাইরাস এর দ্বিতীয় ঢেউ এর ফলে সবথেকে বেশি চাহিদা তৈরি হয়েছে অক্সিজেনের এবং সেই অক্সিজেনের যোগান দিতে বর্তমানে ইন্ডিয়ান রেলওয়ে চালু করেছে অক্সিজেন এক্সপ্রেস। ট্যাংকের মাধ্যমে একাধিক শহরে লিকুইড অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তার মাঝেই কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল একটি বেফাঁস মন্তব্য করে বসলেন। তার মন্তব্য ঘিরে শোরগোল সামাজিক মাধ্যমে। রবিবার মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল বললেন, রাজ্যগুলিকে চিকিৎসায় অক্সিজেন এর চাহিদা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। কিন্তু প্রশ্নটা হল শরীরে অক্সিজেনের চাহিদা নিয়ন্ত্রণে রাখা কিভাবে যাবে ? মোদি সরকারের মন্ত্রী কি তবে কম করে নিঃশ্বাস নিতে বলছেন? কেউ কেউ প্রশ্ন করছেন, রোগী কতটা অক্সিজেন নেবেন সেটাও কি পীযূষ গোয়েল ঠিক করে দেবেন? কেউ আবার বিদ্রুপ করে বলেছেন, কম করে শ্বাস নিন এবার থেকে।
দিনভর পীযূষ গোয়েল এর এই মন্তব্য করে সোশ্যাল মিডিয়াতে একের পর এক ট্রোল এবং মিম তৈরি হচ্ছে। টিকা থেকে ওষুধ বিভিন্ন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রণ জারি করছে। কোন কিছুই যখনই হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে তখন দোষ পড়ছে সরাসরি রাজ্য সরকারের উপরে। আর এবারে করোনাভাইরাস রোগীদের চিকিৎসায় আবশ্যক অক্সিজেনের যোগান কিভাবে হবে না হবে সেই নিয়ে এবারে বেফাঁস মন্তব্য করে বসলেন পীযূষ গোয়েল। প্রতিদিন লাখো লাখো মানুষ নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছেন করোনাভাইরাসে। তার মধ্যে অক্সিজেনের চাহিদা একের পর এক বেড়েই চলেছে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল এর এহেন মন্তব্যের পর নিন্দার ঝড় রাজনৈতিক মহলে। কংগ্রেসের দ্বিগবিজয় সিং বললেন, “হাউ স্টুপিড পীযূষ জি! প্রয়োজনের ওপরই নির্ভর করে অক্সিজেন চাহিদা। সেটা কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব? প্রথম দিন থেকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে অন্যতম অস্ত্র হয়ে আসছে অক্সিজেন। জরুরি অবস্থার মোকাবিলার কোন কিছু করতে পারেনি কেন্দ্রীয় সরকার।” কংগ্রেসের মণীশ তিওয়ারি বলেছেন, “পীযূষ গোয়েল শুধুমাত্র দায় এড়াচ্ছেন। একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে এমন বক্তব্য আশা করা যায় না।”
সেখানেই আবার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে উত্তীর্ণ হন স্বয়ং পীযূষ গোয়েল। তিনি বলেন, “রোগীদের ততটুকু অক্সিজেন দিতে হবে যতটা তাদের প্রয়োজন। কিছু জায়গা থেকে অপচয় এর খবর আসছে। কিছু ক্ষেত্রে দরকার না থাকা সত্ত্বেও অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে।” কিন্তু শুধুমাত্র কিছু কিছু করে তথ্য হীন মন্তব্য দিয়ে ক্ষতি সামাল দিতে পারেনি মোদি সরকারের মন্ত্রী। অক্সিজেন অপচয় এর সম্পূর্ণ অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন মনে করছেন নেটিজেনরা। কয়েকজন লিখেছেন, “আমরা এখন এমন এক সময়ে রয়েছি, যখন বিদ্রূপের মৃত্যু হয়েছে। বাস্তবই বিদ্রুপের জায়গাটা দখল করেছে।”