দূষনমুক্ত পৃথিবী গড়তে নয়া উদ্যোগ, কাগজের বোতলে বিয়ার বিক্রির পরিকল্পনায় এই বিয়ার সংস্থা
শ্রেয়া চ্যাটার্জি – প্লাস্টিক দূষণ গোটা পৃথিবীতে ছেয়ে গেছে। এই দূষণ থেকে মুক্তি পাওয়া অত সহজ ব্যাপার নয়। প্লাস্টিকের সহজলভ্যতার জন্যই মানুষ একে নানাভাবে ব্যবহার করেছে। আর পৃথিবীর মুখে ছিটিয়ে দিয়েছে কালিমা। যার থেকে নিস্তার পেতে গেলে একটু একটু করে পদক্ষেপ নিতে হবে। একদিনে পৃথিবীর সমস্ত প্লাস্টিককে নির্মূল করা সম্ভব নয়। সকলের একটু একটু পদক্ষেপেই পৃথিবী আবার সেরে উঠতে পারে। বর্তমানে করোনা ভাইরাস এর জন্য গোটা বিশ্ব জুড়ে লকডাউন চলছে।
যার ফলে কলকারখানা বন্ধ, যানবাহন রাস্তাঘাটে নেই, বায়ুদূষণ কমেছে অনেকটা। পৃথিবী সেরে উঠছে একটু একটু করে। তবে কয়েক দিন আগেই Carlsberg নামের বিয়ারের কোম্পানি তাদের বিয়ারের বোতলটি কাগজের বানায়। যা সহজেই পরিবেশবান্ধব। এখানে ওখানে মদের কাঁচের বোতল কিংবা প্লাস্টিকের বোতল পড়ে থাকতে দেখা যায়। কাঁচের বোতল যা, পরিবেশবান্ধব হয়তো কিছুটা কিন্তু সাংঘাতিক বিপজ্জনক। ময়লা ফেলার জায়গাতে অনেক কাঁচের বোতলের ভাঙ্গা টুকরো রাস্তার প্রাণীদের বিপদ ঘটায়। শুধু তাই নয়, এমনও দেখা গেছে বন জঙ্গলে আগুন লাগার কারণ অনেক সময় এই কাঁচের বোতলের ভাঙা টুকরো।
সেখানে সূর্যের রশ্মি পড়ে গরম হয়ে গিয়ে আগুন লেগে যায়। ঠিক যেমন করে আতস কাঁচের মাধ্যমে সূর্যের রশ্মির সাহায্যে কাগজে আগুন লাগিয়ে দেওয়া যায়। এত কিছুর কথা মাথায় রেখেই এমন প্রচেষ্টা। এ বোতলের নামকরণ করা হয়েছে ‘Green fibre bottle’. সাদা, সবুজ রঙের বোতলের মধ্যে থাকবে বিয়ার ভরা। বিয়ার খাওয়ার পরে ডাস্টবিনে ছুড়ে দেওয়ার পরে এটি সহজেই মাটির সঙ্গে মিশে যাবে। Carlsberg এর মত Adidas ও পুনর্ব্যবহারযোগ্য জুতো বানিয়েছে। ২০২৪ এর মধ্যে পুনর্ব্যবহারযোগ্য খেলার জামা বানানোরও তাদের পরিকল্পনা রয়েছে।
সাধারণ মানুষের মধ্যেও প্লাস্টিককে নির্মূল করার অনেকক্ষেত্রেই প্রবণতা দেখা গেছে। প্লাস্টিকের বোতলকে অনেকেই নতুনভাবে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তুলছেন। সাধারণত পুরোনো প্লাস্টিকের বোতলকে ব্যবহার করানো হচ্ছে গাছ লাগানোর জায়গা হিসাবে। ব্যালকনিতে, ছাদে ছোট ছোট জায়গায় প্লাস্টিকের বোতল কেটে মাটি পুরে ঝুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে সুন্দর সুন্দর গাছ লাগিয়ে।
যে প্লাস্টিকের বোতল তৈরি হয়ে গেছে তাকে তো কয়েক মুহূর্তের মধ্যে পৃথিবী থেকে ভ্যানিশ করে দেওয়া যাবে না, কিন্তু প্লাস্টিকের জায়গার মধ্যে যদি একটি গাছ লাগিয়ে একটু দূষণের মাত্রা কমানো যায়। প্লাস্টিকের জলের বোতল এর জায়গায় অনেকেই ব্যবহার করছেন তামার বোতল কিংবা বাঁশের বোতল। তবে আমাদের ছোট্ট ছোট্ট প্রচেষ্টায়, পৃথিবী প্লাস্টিক দূষণ মুক্ত হতেই পারে। তবে তার জন্য ফিরে যেতে হবে একটু পিছনের দিকে।
প্লাস্টিকের চেয়ার টেবিলের বদলে ঘর সাজানোর জন্য ব্যবহার করা যেতেই পারে সেই বেতের মোড়া, কিংবা মাদুর। ঘরের জল রাখার জন্য রাখা যেতে পারে কুঁজো। প্লাস্টিকের ব্যাগ এর জায়গায় নেওয়া যেতেই পারে কাপড়ের ছোট ঝোলা। দেখতে খানিকটা সেকেলে মনে হলেও, পরিবেশের জন্য এ বড়ো প্রয়োজন। আমাদের ছোট ছোট পদক্ষেপেই হতে পারে অবিশ্বাস্য পরিবর্তন।