সমস্ত করোনা বিধি মেনে সম্পন্ন হলো প্রয়াত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান। সৌমিত্র-কন্যা পৌলমী বসু জানিয়েছেন, তাঁর বাবা এইসব অনুষ্ঠান ও মৃত্যুর পরের অস্তিত্বকে বিশ্বাস করতেন না। তবু পৌলমীর মা দীপা চট্টোপাধ্যায় পৌলমীকে সৌমিত্রবাবুর পারলৌকিক কাজ করার অনুরোধ করেছেন। মায়ের কথা অনুযায়ী এদিন গৌড়ীয় মঠে বাবার শেষ কাজ সম্পন্ন করেন পৌলমী ও তাঁর দাদা সৌগত চট্টোপাধ্যায়। সৌমিত্রবাবুর শেষ কাজে তাঁর স্ত্রী দীপা অসুস্থ শরীরে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু প্রবাদপ্রতিম অভিনেতার প্রিয় নাতি অভিনেতা রণদীপ বসুকে তাঁর শারীরিক অসুস্থতার কারণে নিয়ে আসা হয়নি।
শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের পর মঙ্গলবার বিকেল 4:45 নাগাদ সৌমিত্রবাবুর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, মহম্মদ সেলিম সহ বামফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ। সৌমিত্রবাবু বেলভিউ হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন তাঁর কন্যা পৌলমীর ইচ্ছা ছিল, সৌমিত্রবাবুর সমস্ত কাজগুলিকে সংগ্রহ করে একটি আর্কাইভ করার। কিন্তু পৌলমী জানিয়েছেন, সৌমিত্রবাবুর সমস্ত কাজ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। সেগুলি একত্রিত করতে বেশ খানিকটা সময় লাগবে। তবে পৌলমী যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সৌমিত্রবাবুর সৃষ্টি একত্রিত করার চেষ্টা করছেন। এদিন এই ব্যাপারে পৌলমী কথা বলেন বিমান বসু ও সূর্যকান্ত মিশ্র-র সাথে। তাঁরাও যথাসাধ্য সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এর মধ্যেই প্রয়াত কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়-কে নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনীতির খেলা। কিছুদিন আগে কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী সৌমিত্রবাবুর বাড়িতে গিয়ে তাঁর ছবিতে মাল্যদান করেন এবং পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। এরপর অধীর মিডিয়ায় বক্তব্য রাখেন যে, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের জীবদ্দশায় তাঁকে বিভিন্ন পদ থেকে অপসারিত করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সরকার। তৃণমূলের কিছু নেতা অধীরের এই মন্তব্য-এর প্রতিবাদ করেন। একইসঙ্গে সৌমিত্রবাবুর কন্যা পৌলমীকে সোশ্যাল মিডিয়ায় হেনস্থা করা শুরু হয়। বাধ্য হয়ে পৌলমী নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাক্টিভেট করে দেন। তবে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় সমস্যায় পড়েছে আর্টিস্ট ফোরাম। অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ছিলেন আর্টিস্ট ফোরামের সভাপতি। যেকোনো সমস্যার অবলীলায় সমাধান করে দিতেন সৌমিত্রবাবু। কিন্তু তাঁর প্রয়াণের পর কে হবেন সেই সুযোগ্য কান্ডারী, তা নিয়ে ধন্দে রয়েছেন আর্টিস্ট ফোরামের সদস্যরা।