Categories: দেশনিউজ

মোটেই কাজটা সহজ ছিল না, এইভাবে বাবার স্বপ্নপূরণ করলো মেয়ে

Advertisement

Advertisement

শ্রেয়া চ্যাটার্জি – ২০১৭ সালে ৯৯০ জন গোটা ভারতবর্ষে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় পাশ করেছেন। যার মধ্যে রয়েছেন এলাহাবাদের ২৬ বছর বয়সী শিরাত ফাতিমা। তিনি পেশায় একজন প্রাথমিক শিক্ষিকা ছিলেন। তারপরে ক্রমাগত পরীক্ষা দিতে দিতে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় পাশ করেছেন। এর পিছনে ছিল তার নিষ্ঠা। শিরাতের বাবা আব্দুল গানি সিদ্দিকী, যিনি চেয়েছিলেন’ মে আই.এ.এস অফিসার হোক। তিনি জানান, “আমি যখন আস্তে আস্তে বড় হচ্ছি আমার বাবা আমাকে সরকারি অফিসে নিয়ে যেতেন, যেখানে তিনি একজন একাউন্টেন্ট পদে চাকরি করতেন।

Advertisement

লাল বাতি জ্বলা গাড়ির দিকে চেয়ে তিনি বলতেন, একদিন তিনি আশা করবেন, এই গাড়ির মধ্যে আমি রয়েছি”। এই স্বপ্ন বাস্তবে রূপায়িত করাটা মোটেই অতটা সহজ কাজ ছিল না। তিনি জানান “আমরা চারজন ভাই বোন, বাবার মাইনের টাকায় সংসার কোন রকমে চলত। আমি আমার বাড়ি থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে একটি বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছি। অনেক সময় হেঁটেও যাতায়াত করেছি। প্রথমদিকে সংসারের ভার নিতে, এলাহাবাদের ডিস্ট্রিক্ট ইনস্টিটিউট অফ এডুকেশন এন্ড ট্রেনিং থেকে বেসিক ট্রেনিং এর সার্টিফিকেট পেয়ে আমি একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা রূপে চাকরি পাই।”

Advertisement

সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় প্রথম প্রেলিমস দিয়েছিলেন ২০১৫ সালে। তার দশ দিন পরেই তিনি তার শিক্ষিকা পদে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি জানান “প্রথম প্রেলিমস পরীক্ষা দিয়েই আমার চক্ষু খুলে গিয়েছিল, এর আগে পর্যন্ত এই বিষয়ে আমার কোনো ধারণাই ছিল না।” তিনি কিভাবে চাকরি করে তার সঙ্গে পড়াশোনা, এই দুটো একসঙ্গে চালিয়ে গিয়েছিলেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি উত্তরে বলেন, “যখন আপনি মনে মনে কোন কিছুর জন্য আপনার মনকে তৈরি করে নেবেন, তখন চারিদিকে কি হচ্ছে না হচ্ছে সেদিকে আপনি মাথা ঘামাবেন না, আমি শুধুমাত্র আমার উদ্দেশ্য পূরণ করে গেছি, আর এটাই আমাকে এই চাকরিটি পেতে সাহায্য করেছে।”

Advertisement

শিরাত স্কুলের উদ্দেশ্যে বের হন সকাল ছটা নাগাদ এবং ফিরতে ফিরতে দুপুর তিনটে হয়ে যায়। চাকরি পাওয়ার আগের দিনের স্মৃতি রোমন্থন করতে করতে তিনি বললেন – “আমি যখন বিদ্যালয় পড়াতে যেতাম তখন আমি আমার নিজের পড়া নিয়ে ভাবতাম না কারণ আমি যেহেতু একটি প্রাথমিক স্কুলে চাকরি করতাম তাই আমার চারিদিকে সব সময় ছোট বাচ্চারা ঘিরে থাকতো।”এমন মানুষরাই তো আমাদের দেশের গর্ব। নিজের স্বপ্ন পূরণের জন্য কষ্ট করে লড়াই করে গেছেন। যারা সংসারে কন্যা সন্তান চান না, তাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন এমন কন্যা সন্তান থাকা দশজন পুত্রসম। ভারতবর্ষের ঘরে ঘরে নারীদের কাছে তো এই সমস্ত মহিলারাই আদর্শ। নিজের লক্ষ্যে অচল থাকতে হবে। তবে একদিন শুভ দিন আসবেই। কারুর প্রতিভাকে কোন সমাজের ক্ষমতা নেই আটকে রাখার।

Recent Posts