সালটা ২০১৩ দিনটা ৩০শে মে,আজকের দিনে বাংলা চলচ্চিত্রে নৌকাডুবি হয়। চলে যান সকলের প্রিয় ঋতুপর্ণ। কেটে গিয়েছে দীর্ঘ ৮ বছর। কিন্তু এখনো তিনি বহু মানুষের মনে বিরাজমান। করোনার ভয়েতে লকডাউনে চলচ্চিত্র জগৎে। তবু কেউ তাকে ভুলতে পারেননি। অসময়ে তার মৃত্যু আজও সকলের কাছে অবিশ্বাস্য। তার সমকামীতা নিয়ে একসময় গোটা বিনোদন জগত উত্তাল হলেও তার অবদান আজও সকলের মনে গেঁথে আছে।
‘জীবনের ওঠা পড়া যেন গায়ে না লাগে’এই কথাটি যেমন ঋতুপর্ণ সেন তার চিত্রপটে ব্যবহার করেছেন ঠিক তেমনি বাস্তবজীবনে এই লাইনটি দিয়ে জীবনের অনেক কথা বলেছেন৷ জীবনের প্রত্যেকটি আঙিনার গল্প বলে যায়৷ টলিউড হোক কিংবা বলিউড তাকে আজও তাঁর সহকর্মী থেকে শুরু করে অভিনেতা অভিনেত্রী, দর্শকেরা আজও তাকে মনে রেখেছেন নানা ভাবে।
সত্যজিৎ পরবর্তী সময়ে বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে অনেকেই ঋতুপর্ণ ঘোষকে মনে করেন। অকাল মৃত্যু আজও মন থেকে মেনে নিতে পারেননি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। তাই তো প্রিয় পরিচালকের স্মৃতিচারণায় নিজের ইন্সটাগ্রাম হ্যান্ডেলে পোস্ট করলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলেন অভিনেতা জানালেন নিজের মনের কথা।
প্রিয় বন্ধুর সাথে সেটে কাটানোর কিছু মুহূর্ত শেয়ার করে লিখলেন, ‘৮ বছর হয়ে গেছে তোর কোনো মেসেজ নেই, বকাঝকা নেই, সাক্ষাৎ হয় না, ঝগড়া হয় না, নতুন নতুন গল্প নিয়ে আলোচনা হয় না। কিন্তু তুই আছিস – আমাদের মনে, আমাদের কথাবার্তায় তুই চির বর্তমান। এই সময়টায় তোর থাকা খুব দরকার ছিল রে। ভালো থাকিস ঋতু।’
ঋতুপর্ণকে পরিচালক বা সহকর্মী ছিলেননা বুম্বাদার। ছিলেন প্রিয় বন্ধু, ফিলোজফার এবং গাইড। প্রসেনজিৎ জানিয়েছেন, তাঁর অভিনয় জগতের এই কেরিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন স্বয়ং ঋতুপর্ণ। তিনি একাধিক বাণিজ্যিক ছবিতে সফলতা পেলেও নিজের অভিনয় দক্ষতা দেখাতে পেরেছিলেন ঋতুপর্ণ’র ছবিতে। তিনিই প্রথম বুম্বাদার মধ্যে অন্য এক অভিনেতার খোঁজ পান। ঋতুপর্ণ ঘোষের হাত ধরে তাঁর প্রথম কাজ ‘১৯ এপ্রিল’ সিনেমা। সেখান থেকেই বন্ধুত্বের শুরু তবে ঋতুপর্ণ না থাকলেও বন্ধুত্ব শেষ হয়নি। প্রসেনজিৎ আর ঋতুপর্ণ ঘোষের জুটি টলিউডে ব্যপক জনপ্রিয়তা পায়। এই জুটির তালিকায় রয়েছে ‘উৎসব’, ‘চোখের বালি’, ‘দোসর’, ‘দ্য লাস্ট লিয়ার’, ‘খেলা’, ‘সব চরিত্র কাল্পনিক’, ‘নৌকাডুবি’-র মতো ছবি।