শ্রেয়া চ্যাটার্জি – করলা একটু তেতো সবজি। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি একটি উত্তম সবজি। প্রতিদিন নিয়ম করে করে করলার রস খেলে রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণ আসবে। বাতের ব্যথাকেও নিয়মিত করলার রস খাওয়া যায় আয়ুর্বেদে এটি কৃমিনাশক, পিত্তনাশক, কফ নাশক সবজি। চামড়ার রোগেও করোলা বেশ উপকারী। যারা এলার্জিতে ভুগছেন তারা প্রতিদিন দু চামচ, দুবেলা যদি করলার রস খান, তাহলে এর থেকে মুক্তি পেতে পারেন। অনেক দিন রোগ ভোগ করার পরে যদি মুখে অরুচি আসে তাহলে অনেকে করলা খেয়ে থাকেন। করলার সাধারণত তেতো সবজি হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত, তাই অনেকেরই খাবারের তালিকায় এই তেতো সবজিটি একেবারে পছন্দ না। কিন্তু তাদের মুখের সামনে যদি করলার এই সুস্বাদু রেসিপি বানিয়ে ধরা যায়, নিঃসন্দেহে সে চেটেপুটে খাবে। জেনে নিন, ‘পুরভরা করলা’ র রেসিপি
উপকরণঃ
১)বড় করলা
২)খাসির মাংসের কিমা/মাছ/চিংড়ি মাছ /পনির /সয়াবিন।
৩)পেঁয়াজ কুচি
৪)আদা বাটা
৫)রসুন বাটা
৬)লঙ্কা
৭)এলাচ
৮)দারচিনি
৯)তেল
১০)নুন স্বাদ মত
প্রণালীঃ
এই পদটি আমিষ, নিরামিষ দুইভাবেই বানানো যায়। গোটা গোটা বেশ বড় আকারের করলা কে মাঝখান থেকে কাটতে হবে। বীজগুলি কে বের করে নিতে হবে। অনেকে বীজ গুলি ফেলে দেন তবে, বীজ গুলিকে ভালো করে বেটে নিয়ে পুরের মধ্যে ব্যবহার করতেই পারেন। তাতে স্বাদ খানিক বাড়বে বৈ কমবে না। যদি আমিষ পদ হিসাবে পুরটি বানাতে চান, তাহলে ব্যবহার করতে পারেন মটন কিমা, কিংবা চিংড়ি মাছ কিংবা যে কোনো মাছ। মটন কিমা বা কোন মাছ ভালো করে আগে সেদ্ধ করে নিতে হবে, চিংড়ি মাছ হলে একটু ভেজে নিতে হবে, আর যদি নিরামিষ পদ হিসাবে এটি কেউ খেতে চান, তাহলে ব্যবহার করতে পারেন পনির কিংবা সোয়াবিন সেক্ষেত্রে পনির আর সোয়াবিন একটু ভেজে নিয়ে ভালো করে হাত দিয়ে চটকে নিতে হবে।
পুরটি বানানোর জন্য কড়াইতে প্রথমে তেল গরম করতে দিতে হবে। তেলের মধ্যে দারচিনি, এলাচ এবং লঙ্কা ফেলে দিতে হবে। আস্তে আস্তে পেঁয়াজ কুচি রসুন বাটা আদা বাটা দিয়ে দিতে হবে। ভালো করে ভাজা ভাজা হয়ে গেলে মাটন কিমা, অথবা সেদ্ধ করা মাছ কিংবা ভাজা চিংড়ি মাছ দিয়ে ভাল করে কষাতে হবে। কিছুক্ষণ পরেই বেটে রাখা বীজগুলো দিয়ে দিতে হবে। বেশ খানিকটা মাখা মাখা হয়ে গেলে নুন দিয়ে আবার কিছুক্ষণ নাড়তে হবে। শুকনো শুকনো হয়ে গেলে করা থেকে নামিয়ে ঠান্ডা হতে দিতে হবে।
যারা নিরামিষ খাবেন তাদের পদ্ধতিটা অনেকটা এক রকম তবে সেক্ষেত্রে কড়াই এর মধ্যে তেল দেওয়ার পরে দারচিনি, লবঙ্গ, এলাচ এবং আস্তে আস্তে হাতে করে ভালো করে চটকে রাখা পনির কিংবা সয়াবিনের টুকরোগুলো ভালো করে ভাজতে হবে, যোগ করে দিতে হবে বেটে রাখা করলার বীজ গুলি। তবে কেউ যদি মনে করেন, এর সঙ্গে সেদ্ধ করা আলু ভালো করে হাতে চটকে মেখে নিয়ে মেশাতে পারেন। নুন প্রয়োজন মতন দিয়ে দিতে হবে। ভাজা ভাজা হয়ে গেলে পুরটি ঠান্ডা করতে দিতে হবে। পুর একটু ঠাণ্ডা হলে, কেটে রাখা করলার মধ্যে পুর ভরে দিতে হবে। করলাগুলিকে সুতো দিয়ে ভালো করে বেঁধে দিতে হবে। তারপরে ভাপে সেদ্ধ করতে বসাতে হবে। বেশ কিছুক্ষণ পরে সিদ্ধ হয়ে গেলে, নামিয়ে গরম গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন ‘সুস্বাদু পুরভরা করলা’।