পাটনা: আজ, বুধবার বিহারে প্রথম দফার বিধানসভা নির্বাচন ছিল। সকাল সাতটা থেকে মোট ৭১টি আসনে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া চলে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সমস্তরকম বিধিনিষেধ এবং সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে নির্বাচনের আয়োজন করেছিল নির্বাচন কমিশন। প্রতিটি বুথে ভোটার সংখ্যা সীমিত রাখা হয় ১০০০-১৬০০ মধ্যে। ৮০ বছরের বেশি বয়সের জন্য পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা করা হয়। ইভিএম স্যানিটাইজ করা হয় বারে বারে। বুথে ছিল থার্মাল স্ক্যানার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান, জলের ব্যবস্থা। ভোটকর্মীদের জন্যে মাস্ক-গ্লাভস ছিল বাধ্যতামূলক। এত অবধি সব ঠিক ছিল। কিন্তু ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হতেই মাস্কে বিজেপি লোগো লাগিয়ে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করেন বিহারের কৃষিমন্ত্রী প্রেম কুমার। বিরোধী দল এই কারণে এনডিএকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। আর দুপুর গড়াতেই বিজেপির নিশানায় কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগ উঠেছে রাহুলের বিরুদ্ধে।
সাধারণত নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনের ৪৮ ঘণ্টা আগে সমস্তরকম প্রচার বন্ধ হয়ে যায়। কোনও দল নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রচার করতে পারে না। কিন্তু বিহারে যখন বুথে বুথে ভোট দিচ্ছিলেন ভোটাররা, তখন নিজের টুইটারে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী মহাগটবন্ধনের ডাক দিয়েছিলেন।
সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গণতন্ত্রের এই উৎসবে শামিল হওয়ার ডাক দেন বিহারবাসীকে। সেই পথেই হাঁটেন রাহুলও। কিন্তু তার মধ্যেই বাঁকা পথ হঠাৎ করে গ্রহণ করলেন সোনিয়া-পুত্র। হ্যাশট্যাগ ‘আজ বিহার বদলেগা’ এই লাইন লিখে ভোটার প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন এমন অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। শুধু অভিযোগ তুলেই ক্ষান্ত থাকেনি গেরুয়া শিবির। উল্টে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে দল। এমনকি রাহুলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক, এমন দাবিও জানিয়েছেন বিজেপি নেতারা।
https://twitter.com/RahulGandhi/status/1321285899028758529?s=19
সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় এটাই যে এত সমালোচনার পরেও রাহুল নিজের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে টুইটটি ডিলিটও করেননি। এর ফলে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে নেগেটিভ পাবলিসিটি পাওয়ার জন্য রাহুল গান্ধী জেনে বুঝে এই কাজটি করেছেন। এমনকি আজ অন্যত্র যেখানে আজ নির্বাচন ছিল না, সেখানে তিনি একটি সভাও করেন এবং নাম করে বিহারের কর্মসংস্থানের অভাব হওয়ার কারণে বর্তমান সরকারকে নিশানা করে তুলেছেন তিনি। সব মিলিয়ে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া নির্বিঘ্নে হলেও রাহুলের টুইটের ফলে উত্তেজনাপূর্ণ একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, এমনটা বলাই যায়।