বাঙালির সবথেকে বড়ো পুজো দুর্গাপুজো। এই পুজোতে জড়িয়ে থাকে অনেক অনুভূতি। আশ্বিন মাসের শুক্ল তিথিতে এই পুজো হয়ে থাকে। এই সময় চারিদিক মেতে ওঠে শিউলি ফুলের গন্ধে। মাঠে ঘাটে দেখা যায় কাশফুল। আমরা সকলেই জানি দুর্গাপুজো সার্বজনীন পূজো। এই পূজোতে কোনো মানুষের ধর্ম ভেদাভেদ থাকে না। ঠিক তেমনই রানাঘাটের ঘোষ বাড়ির দুর্গা পুজোতেও দেখা যায়।
এই ঘোষ বাড়িতে হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষরা একত্রিত হয়ে এই পুজো করেন। এই পুজো হয়ে আসছে ৪৯৮ বছর ধরে। এই পুজোর সূচনা হয় ১৫২০ খ্রিস্টাব্দে। চৈতন্য চরণ ঘোষ হুগলি জেলায় প্রথম এই পূজার সূচনা করেন। তারপরে এই পুজো ব্রহ্ম ডাঙাতে শুরু হয়। যা এখন রানাঘাট নামে পরিচিত।
চৈতন্য চরণ ঘোষ এর কোনো সন্তান ছিল না তাই এই পুজোর দায়িত্ব নেন মকরন্দ ঘোষ। তার বংশধরেরা আজও এই পুজো কে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। বর্তমানে এই পুজোর দায়িত্বে রয়েছেন রঙ্গীত ঘোষ ও দীপককান্তি ঘোষ।
এখানে পঞ্চমীতে হয় দেবীর বোধন। আর নবমীতে হয় কাদা খেলা। স্থানীয় মানুষদের বিশ্বাস এই খেলার মধ্যে দিয়ে আসে পবিত্রতা। আগে নবমীতে এখানে ৫১ টি ছাগলকে বলি দেওয়া হতো। কিন্তু স্বপ্ন পাওয়ার পর এই বলি বন্ধ হয়ে যায়।
এই পুজোর একটি বিশেষত্ব আছে। এখানে দুর্গাপূজার সময়ই লক্ষ্মীপুজো করা হয়। দেবীর বোধনের আগেই রক্ষা প্রদীপ জালানো হয়। এই প্রদীপ নেভানো হয় দশমির দিন। এখানে দুর্গাপুজোয় সম্প্রীতির ভাব ফুটে ওঠে। এবং আকাশে জ্বলে ওঠে আলোর দীপ্তি।