আগামী মাসে দেশের ট্র্যাকে দৌড়াতে শুরু করবে র্যাপিড রেল। আধুনিক সুবিধা সহ দেশের প্রথম দ্রুত গতির রেল দিল্লি থেকে মিরাট র্যাপিড রেল করিডোরে চলবে। প্রথম ধাপে সাহিবাদ থেকে দুহাই পর্যন্ত চালানো হবে এই ট্রেন। দিল্লি এবং মিরাটের মধ্যে দ্রুত রেলের এই প্রকল্পটি ৩টি ধাপে সম্পন্ন হবে এবং শেষ ধাপটি ২০২৫ সালের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আপনি যদি মেট্রো ট্রেনকে একটি আরামদায়ক ও দুর্দান্ত ট্রেন হিসাবে বিবেচনা করেন, তবে হয়তো আপনার যাত্রাকে আরো আনন্দময় করে তুলবে এই নতুন রেল ব্যবস্থা। আপনার রেলের ভ্রমণকে আরো উন্নত করে তুলতে পারে এই ট্রেন। র্যাপিড রেলের যাত্রা আপনাকে পুরো বিমান ভ্রমণের অনুভূতি দেবে। এটিতে চড়ার পরে, আপনি মেট্রোতে ভ্রমণকেও কিছুটা ‘বেদনাদায়ক’ হিসাবে দেখতে পারেন। সুবিধা, গতি এবং শৈলীর দিক থেকে, র্যাপিড রেল মেট্রোকে ছাড়িয়ে যাবে সবদিকেই।
র্যাপিড রেলে অ্যাডজাস্টেবল চেয়ার থাকবে, পাশাপাশি দাঁড়ানোর সময় যাত্রীদের যাতে কোনো অসুবিধার সম্মুখীন হতে না হয় সে জন্য সম্পূর্ণ ব্যবস্থা করা থাকবে। এখানে থাকবে ইন্টিগ্রেটেড এসি সিস্টেম, স্বয়ংক্রিয় দরজার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, লাগেজ রাখার জায়গা এবং বড় জানালা, যাতে যাত্রীরা বাইরের দৃশ্য দেখতে পারবেন। র্যাপিড রেলে আরও অনেক সুবিধা রয়েছে, যা মেট্রোতে নেই। এর দরজাগুলো হবে বিমানের মতোই প্লাগইন দরজা। অর্থাৎ দরজা বন্ধ হওয়ার পর বাইরে থেকে বাতাস প্রবেশ করতে পারবে না। এগুলো স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার সাথে সংযুক্ত থাকবে। সাধারণ কোচে তিনটি দরজা এবং প্রিমিয়াম কোচে দুটি দরজা থাকবে।
RRTS ট্রেনগুলি মেট্রোর চেয়ে ৩ গুণ বেশি গতিতে, ১৬০ কিমি/ঘন্টা গতিতে চলতে পারে। এটি মাত্র ৬০ মিনিটে ১০০ কিলোমিটার রাস্তা যেতে পারে। মেট্রোর সাধারণ গতি ৮০ কিমি/ঘন্টা। তার থেকে অনেকটাই বেশি গতিতে ছুটবে এই নতুন ট্রেন ব্যবস্থা, যার ভবিষ্যত একেবারেই উজ্জ্বল বলা চলে।
প্রতিটি সিটে মোবাইল এবং ল্যাপটপ ইত্যাদি চার্জ করার সুবিধা র্যাপিড রেলে উপলব্ধ করা হবে। সিটের সাথে কোট হ্যাঙ্গারও দেওয়া হয়, যাতে যাত্রীরা এই ট্রেনে উঠেই নিজের কোট রাখতে পারেন। যাত্রীরা তাদের লাগেজ সিটের উপরে নির্দিষ্ট জায়গায় রাখতে পারবেন। এই সুবিধাটি কিন্তু মেট্রোতে পাওয়া যায় না।
যাত্রীরা র্যাপিড রেলে ওয়াইফাই সুবিধা পাবেন। ডাইনামিক রুট ম্যাপ এবং ইনফোটেইনমেন্ট সিস্টেমও বসানো হবে প্রতিটি কোচে। পাশাপাশি প্রতিটি কোচেই লোকো পাইলটের সঙ্গে যোগাযোগ করার সুবিধাও দেওয়া হবে।
দিল্লি-মিরাট রুটে কাজ শেষ হওয়ার পরে, মোট ৩০টি দ্রুতগতির ট্রেন চালানো হবে। প্রথম ধাপে মাত্র ১৩টি ট্রেন চালানো হবে। দ্রুত রেল করিডোরের কমান্ড সেন্টার দুহাইতে নির্মিত হবে। এখন পর্যন্ত র্যাপিড রেলের ভাড়া সম্পর্কে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়নি। তবে, অনুমান করা হচ্ছে, এই ট্রেনে প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া পড়বে ২ টাকা। পরবর্তীতে ভাড়া বাড়ানোর অধিকার বেসরকারি সংস্থার থাকবে না। মেট্রোর মতোই ভাড়া নির্ধারণ করবে কমিটি।