RD নাকি SIP কোথায় বিনিয়োগ করবেন? জেনে নিন এই দুটোর সুবিধা এবং অসুবিধা
রেকারিং ডিপোজিট এবং মিউচুয়াল ফান্ড এসআইপি দুটোই এখন ভারতে বেশ জনপ্রিয় বিনিয়োগের মাধ্যম হয়ে উঠেছে
আপনি যদি এখন ভবিষ্যতের জন্য একটা বড় রকমের তহবিল তৈরি করতে চান তাহলে আপনার জন্য রয়েছে একটা দারুন সুযোগ। আপনাকে এখন সঞ্চয় এবং বিনিয়োগের মন্ত্রটি মনে রেখে প্রতি মাসে বিনিয়োগ করে যেতে হবে। তাহলেই আপনি পেয়ে যাবেন দারুণ সাফল্য। সঞ্চয় এবং বিনিয়োগ যদি আপনাকে একসাথে করতে হয় তাহলে প্রতি মাসে আপনার আয়ের কিছু টাকা সঞ্চয় করতে হবে এবং সেটাকে ভালো কোন একটি প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে হবে। যখনই ভালো বিনিয়োগের প্রকল্পের কথা মাথায় আসে তখন যে প্রকল্পগুলির নাম সব থেকে আগে মনে পড়ে তার মধ্যে অন্যতম হলো রেকর্ডিং ডিপোজিট RD এবং সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান অর্থাৎ SIP। যেকোনো ব্যক্তি এই দুটি প্রকল্পে ১০০ টাকা দিয়ে বিনিয়োগ শুরু করতে পারেন। দুটি প্রকল্পে বিনিয়োগ করতেই আপনাকে কিছু রিস্ক নিতে হবে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন প্রকল্পে কিরকম কি সুবিধা পাওয়া যায়।
প্রথমত যদি আমরা রেকর্ডিং ডিপোজিট সম্পর্কে কথা বলি তাহলে আপনি এটি ব্যাংকে শুরু করতে পারেন। আপনি যেকোনো সময়ের জন্য রেকারিং ডিপোজিট শুরু করতে পারেন। ১ বছর ২ বছর ৩ বছর ৪ বছর ৫ বছর এবং ১০ বছরের রেকারিং ডিপোজিট করা যায়। আপনি যদি এটা কমপক্ষে পাঁচ বছরের জন্য চালিয়ে যান তাহলে আপনি রেকারিং ডিপোজিট থেকে দারুণ রিটার্ন পেয়ে যাবেন। এটি একটি এমন প্রকল্প যেখানে আপনাকে নিশ্চিত রিটার্ন দেওয়া হবে। এটা অত্যন্ত নিরাপদ একটি বিনিয়োগের জায়গা এবং তাই অনেকে এখানে সঞ্চয় করে থাকেন। বেশিরভাগ লোক রেকারিং ডিপোজিট এর মাধ্যমে অর্থ সঞ্চয় করেন এবং তারপরে রেকর্ডিং ডিপোজিটের মাধ্যমে সংগৃহীত পরিমাণ ফিক্স ডিপোজিটে বিনিয়োগ করে দেন।
এই মুহূর্তে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া তে রেকারিং ডিপোজিটে ৬.৮০ শতাংশ থেকে ৭ শতাংশ পর্যন্ত সুদ দেওয়া হচ্ছে। পোস্ট অফিসে রেকারিং ডিপোজিট এর উপরে এই মুহূর্তে পাওয়া যাচ্ছে ৬.৭ শতাংশ হারে ইন্টারেস্ট। অন্যদিকে প্রবীণ নাগরিকরা ০.৫০ শতাংশ বেশি সুদ পেয়ে যাচ্ছেন। আপনি কিন্তু এখানে ঋণ বা ওভারড্রাফ্টের সুবিধা পেয়ে যাবেন। এটি আপনার জমার পরিমাণের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। তবে রেকর্ডিং ডিপোজিট আপনি যদি খোলেন তাহলে প্রাপ্ত সুদের উপরে ট্যাক্স ধার্য হয়। যদি আপনার সুদের থেকে আয় ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়, ( প্রবীণ নাগরিকদের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকা ) তাহলে আপনাকে কর দিতে হবে না। তবে এর ওপরে যদি আপনার আয় হয় তাহলে ১০ শতাংশ করে টিডিএস কাটা হয়।
এবারে যদি আমরা এসআইপির ব্যাপারে কথা বলি, তাহলে এই প্রকল্পে রেকারিং ডিপোজিট এর মত আপনি ছোট বিনিয়োগ দিয়ে শুরু করতে পারেন। কিন্তু এসআইপিতে বাজারে অর্থ বিনিয়োগ করা হয় তাই রিটার্ন একেবারে নিশ্চিত নয়। এতে কোন সুদের হার আপনি পাবেন না। যদি আপনার মিউচুয়াল ফান্ড ভালো কাজ করে বাজারে তাহলে আপনার এসআইপিতে বিরাট লাভ হবে। মিউচুয়াল ফান্ডে যারা বিনিয়োগ করেন, তাদের ঝুঁকি এমনিতে শেয়ার বাজারের থেকে কম। তবে ফান্ড ম্যানেজাররা সব সময়ই বলেন, এখানে কিন্তু নূন্যতম পরিমাণ হলেও কিছুটা ঝুঁকি থেকেই যায়। আপনি যেকোনো সময়ের জন্য এসআইপি করতে পারেন। এর কোন লক ইন পিরিয়ড থাকে না। আপনি যখনই চান, এই প্রকল্প বন্ধ করতে পারেন আবার যখনই চান আবার চালু করতে পারেন। আপনি ভাল সময়ে টাকা তুলতে পারেন, আবার এসআইপির খারাপ সময়ে টাকা বিনিয়োগ করতে পারেন।
আপনি যদি ভাল টাকা মুনাফা অর্জন করতে চান, তাহলে আপনাকে এই প্রকল্পটি একটা লম্বা সময়ের জন্য চালিয়ে যেতে হবে। এতেও কিন্তু আপনি চক্রবৃদ্ধি সুদের সুবিধা পাবেন। এর ফলে আপনার দীর্ঘ মেয়াদে দ্রুত সম্পদ তৈরি হবে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এসআইপিতে গড় রিটার্ন মোটামুটি ১২ শতাংশ। এমন পরিস্থিতিতে অনেক সময় দেখা যায় এই রিটার্ন রেকারিং ডিপোজিটের থেকে অনেক বেশি। যদি আপনি এসআইপিতে মোটা টাকা বিনিয়োগ করেন তাহলে একটা মোটা তহবিল তৈরি করতে পারেন একটা অপেক্ষাকৃত কম সময়ের মধ্যে।