যখনই আমরা টিভি ইন্ডাস্ট্রির কোনও বিখ্যাত টেলিভিশন শো নিয়ে কথা বলি, বিআর চোপড়ার মহাভারতের নাম অবশ্যই মনে আসে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে সফল শো, যা ১৯৯০ – এর দশকে প্রতিটি বাড়ির একটি আকর্ষণ হয়ে উঠেছিল এবং এতে অভিনয় করা অভিনেতারাও এই ধারাবাহিকে প্রাণবন্ত ভূমিকা পালন করেছিলেন। আর দ্রৌপদীর চরিত্র ছিল এই মহাভারতের অন্যতম বিখ্যাত চরিত্র। আর এই চরিত্রে অভিনয়ের জন্যই বিখ্যাত হয়েছিলেন টিভি অভিনেত্রী রূপা গাঙ্গুলী। কিন্তু, দ্রৌপদী হয়ে ওঠার এই যাত্রা তার জন্য এত সহজ ছিল না। শোনা যায়, যখন তিনি দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের দৃশ্যের শুটিং করছিলেন, তখন শুটিংয়ের পরে তার অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায়। চলুন আজ আপনাদের এই কাহিনীর ব্যাপারে আরো বিস্তারে জানাই।
মহাভারতে যখন দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ দৃশ্যের শুটিং হচ্ছিল, সে সময় অভিনেত্রী রূপা গাঙ্গুলী নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে সেটেই ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকেন। কথিত আছে, যখন দ্রৌপদীর ওই দৃশ্যের শুটিং হচ্ছিল, তখন বিআর চোপড়া এমন কথা বলেছিলেন যে রূপা গাঙ্গুলি ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। আসলে তিনি বলেছিলেন যে, জনসমাবেশে যদি একজন মহিলাকে সবার সামনে চুল ধরে টেনে নিয়ে যায় এবং সবার সামনে তার জামাকাপড় খুলে দেওয়া হয়, তাহলে সেই মহিলার কী হবে? সেরকম ভাবটাই ফুটিয়ে তুলতে হবে এই দৃশ্যের জন্য। আর এ নিয়ে বেশ নার্ভাস ছিলেন রূপা গাঙ্গুলী। তবে যাইহোক, তিনি পুরো দৃশ্যটি এক টেকে করেছিলেন এবং এত আবেগে পূর্ণ করেছিলেন যে তিনি শুটের শেষে আধ ঘন্টা ধরে শুধু কেঁদেছিলেন। তিনি সেই দিন নিজের চোখের জল ধরে রাখতে পারেন নি।
তবে, এই চরিত্রের প্রথম পছন্দ কিন্তু রূপা গাঙ্গুলি ছিলেন না। রূপা গাঙ্গুলীকে দ্রৌপদীর চরিত্র দেওয়ার আগে বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী জুহি চাওলাকে চরিত্রটি অফার করা হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় জুহির ছবি কেয়ামত সে কেয়ামত তক মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল, যার কারণে জুহি দ্রৌপদীর ভূমিকায় অভিনয় করতে পারেননি এবং তারপর এই রোলটি রূপা গাঙ্গুলীকে দেওয়া হয়। আপনাদের জানিয়ে রাখি, রূপা গাঙ্গুলি কলকাতার একজন বিখ্যাত অভিনেত্রী এবং রাজ্যসভার সাংসদও। মহাভারতের আগে, তিনি ১৯৮৫ সালে বাংলা টিভি শো ‘স্ত্রীর পত্র’ দিয়ে তিনি গ্ল্যামার দুনিয়ায় আত্মপ্রকাশ করেছিলেন।