ডলারের গর্জনে চাপে পড়ল রুপি, কুড়ি বছরের সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছাল মার্কিন মুদ্রা ডলার
ফেডারেল রিজার্ভের তরফ থেকেও বারংবার সুদের হার বৃদ্ধি করার কারণে চাপে পড়ছিল ভারতীয় মুদ্রা
বড় সমস্যায় পড়ল ভারতীয় অর্থনীতি। মার্কিন ডলারের গর্জনের সামনে সোমবার ভারতীয় টাকা রুপি রেকর্ড পর্যায়ে নিচে নেমে গিয়েছে বলে খবর দালাল স্ট্রিটে। সোমবার সকালে ডলারের বিপরীতে ৫৬ পয়সা কমেছে ভারতীয় মুদ্রার দাম এবং বাজার খোলার সময় এই মুদ্রার দাম চলে গিয়েছিল ৮১.৫৪ স্তরে। এটি ভারতীয় টাকার জন্য এই মুহূর্তে সর্বনিম্ন স্তর এবং ডলারের মুদ্রার জন্য এই সময়টা সবথেকে উর্ধ্বমুখী। বিগত কুড়ি বছরের মধ্যে এই মুহূর্তে সর্বোচ্চ জায়গাতে রয়েছে মার্কিন ডলার। মার্কিনী মুদ্রা ডলারের বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রা রুপির পতনের কারণে অপরিচিত তেল এবং অন্যান্য পণ্য আমদানির খরচ অনেকটাই বেশি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এতে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মুদ্রাস্মৃতি নিয়ন্ত্রণ করতে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক ইতিমধ্যেই ৩০ সেপ্টেম্বর নতুন করে রেপো রেট বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে। ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার আরো একবার বৃদ্ধি হওয়ার কারণে ভারতীয় টাকার উপরে সৃষ্টি হয়েছে চাপ। বাণিজ্য ঘাটতি বৃদ্ধি এবং বিদেশি পুঁজি বহিষ্কারের কারণে মূল্যস্ফিতি আরো বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। এই সপ্তাহে রিজার্ভ ব্যাংকের মনিটরি পলিসি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।
তবে ডলারের নিরিখে ভারতীয় মুদ্রার দাম কমে যাওয়ার কারণে সব থেকে বেশি সমস্যার মধ্যে পড়বে তেল কোম্পানিগুলি। আমদানি করা ভোজ্য তেলের দাম বাড়বে হু হু করে। মিল মালিকদের সংগঠন সলভেন্ট এক্সট্রাক্টর অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার নির্বাহী পরিচালক বিভি মেহতা বলেছেন, ডলার শক্তিশালী হওয়ার কারণে আমদানি করা ভোজ্য তেলের দাম বাড়বে। এতে শুধুমাত্র গ্রাহকের প্রভাবিত হবেন না, একই সাথে প্রভাবিত হবে তেল কোম্পানিগুলি। অপরিশোধিত আমদানি বৃদ্ধির কারণে আগস্টে বাণিজ্য ঘাটতি এই মুহূর্তে দ্বিগুণেরও বেশি। বর্তমানে এই বাণিজ্য ঘাটটির পরিমাণ ২৭.৯৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের স্তরে পৌঁছে গিয়েছে। সব মিলিয়ে ভারতীয় টাকার এই গভীর মূল্য পতন যে আপনার ভবিষ্যতকে প্রভাবিত করবে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
ডলারের বিপরীতে রূপি সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে যাওয়ার পর এর সরাসরি প্রভাব পড়বে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের উপর। আমদানি করা জিনিসের দাম বৃদ্ধি পাবে বহুলাংশে। ভারতে যারা আমদানি করা জিনিসের উপরে নির্ভর করে থাকেন তাদের জীবনযাপন অনেকটা দামী হয়ে যাবে। তবে সব থেকে বেশি সমস্যার মধ্যে পড়বেন যারা নিজেরা গাড়ি চালান। ভারতে এই মুহূর্তে আশি শতাংশ অপরিশোধিত তেল আমদানি করা হয়ে থাকে। তাই যদি ভারতকে এই অপরিশোধিত তেলের ভান্ডার পূরণ করতে হয় তাহলে ভারতকে অতিরিক্ত দাম দিতে হবে এবং বৈদেশিক মুদ্রা বেশি খরচ হবে।