শুনলে আশ্চর্য হয়ে যাবেন সাবর্ণ রায় চৌধুরীর বাড়ির পুজোর কথা!

বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ হলেও দুর্গাপূজার মধ্যে জড়িয়ে রয়েছে অনেক আলাদা অনুভূতি। ছোটো থেকে বড়ো সবাই মেতে ওঠে এই পুজোয়। সার্বজনীন এই পুজোয় মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ থাকে না। মণ্ডপে মণ্ডপে মেতে ওঠে সকলে। যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এই পুজো। আশ্বিন মাসের এই চারটা দিন ধরে চলে দেবীর আরাধনা। কথায় আছে দেবী এই চারটে দিন তার ছেলেমেয়েদের নিয়ে বাপের বাড়ি বেড়াতে আসেন।

এই পুজো শুধু মণ্ডপে নয় অনেক বাড়িতেও হয়ে থাকে।এই পুজো চলে আসছে কোথাও ১০০ বছর ধরে কোথাওবা ২০০ বছর ধরে। তেমনি সাবর্ণ রায়চৌধুরীর বাড়ির পুজো এবার অতিক্রম করল ৪০৯ বছর।

বছরের অন্য সময় গুলিতে এই পরিবারের লোকজনেরা যেখানেই থাকুক না কেন এই পুজোতে তারা একত্রিত হয়। চারদিনব্যাপী প্রচুর আনন্দের সাথে তারা এই পুজো কাটান। ছোটো বড়ো সবাই একসাথে মেতে ওঠে নাচের আনন্দে। ষষ্ঠী থেকে শুরু হয়ে দশমী পর্যন্ত চলে তাদের নাচ। বিশেষ করে ধুনুচি নাচ।

৪০৯ বছর ধরে তারা একইভাবে এই পুজো করে আসছে। এখানকার আরতী দেখবার মতো। আরতী দেখার জন্য লক্ষ লক্ষ লোক ভিড় করে আসে। ৪০৯ বছর ধরে চলে আসছে মায়ের এই ভোগ আরতি।

মায়ের ভোগের জন্য অনেক আয়োজন হয়। মায়ের এই ভোগ কে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। দুই ভাগে থাকে আমিষ ও একভাগে থাকে নিরামিষ। দুর্গা ও কলা বউ কে দেওয়া হয় নিরামিষ ভোগ। ও নারায়ণকে দেওয়া হয় আমিষ ভোগ। এছাড়া সকল কে আলাদা আলাদা ভাবে ভোগ দেওয়া হয়। এই পরিবারের বউ ও মেয়েরাই মায়ের এই ভোগ রান্না করেন।

এই পুজোর কিছু ইতিহাস রয়েছে। সেটি হল–

নয়ের দশকে কনৌজ থেকে পাঁচজন ব্রাহ্মণ এসেছিলেন। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন সৌরবি। এই সৌরবি পরবর্তীকালে এই সাবর্ণ বংশের প্রতিষ্ঠা করেন। লক্ষীকান্ত ১৬১০ সালে এই পুজো শুরু করেন। আর আজ এই পুজোর বয়স ৪০৯ বছর।

তারা জানাচ্ছেন মায়ের ইচ্ছেতেই তারা ৩৪ পুরুষ ধরে এই পুজো ধরে রেখেছেন। এবং পরবর্তী প্রজন্মও এই পুজো কে এগিয়ে নিয়ে যাবে।