বেশ কিছু বছর আগেই চলে গিয়েছিলেন বাংলার আধুনিক যুগের কবিতার পঞ্চপান্ডবের প্রথম চার কবি শক্তি, সুনীল, উৎপল এবং বিনয়। আর এবারে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন জীবনানন্দ পরবর্তী যুগের পঞ্চপান্ডবের শেষ কবি শঙ্খ ঘোষ। বিগত ১৪ এপ্রিল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এমনিতে তার বেশ কিছু বার্ধক্য জনিত সমস্যা ছিল। পাশাপাশি এই বছর জানুয়ারি মাসে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ফলে শুধুমাত্র করোনাভাইরাস নয় বেশ কিছুটা দুর্বল ছিলেন তিনি শারীরিক দিক থেকেও।
করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার পরে তিনি সারাক্ষণ বাড়িতেই থাকতেন। কিন্তু মঙ্গলবার, রাত্রিবেলা আচমকা তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। বুধবার তাকে ভেন্টিলেশনে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ ৮৯ বছর বয়সে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেন এই স্বনামধন্য কবি।
দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি বহু ভূমিকায় কাজ করেছেন। প্রথমে তিনি দিল্লি এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছিলেন। তারপর ইউনিভার্সিটি অফ আইওয়া তে রাইটার্স ওয়ার্কশপে সামিল হয়েছিলেন শঙ্খ ঘোষ। দু’বছর আগে থেকে দেখা গিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারের নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে ‘মাটি’ নামক একটি কবিতা রচনা করতে। এছাড়াও, দিনগুলি রাতগুলি, গান্ধর্ব কবিতাগুচ্ছ, মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে, বাবরের প্রার্থনা সহ একাধিক কবিতার বই তিনি উপহার দিয়েছেন বাঙালি পাঠকদের।
১৯৭৭ সালে বাবরের প্রার্থনা বইটি লিখে তিনি সাহিত্য একাডেমী পুরস্কার পেয়েছিলেন। তারপর, ১৯৯৯ সালে রক্তকল্যান নাটকটি কন্নড় ভাষা থেকে অনুবাদ করে তিনি লাভ করেন দ্বিতীয় সাহিত্য একাডেমী পুরস্কার। এছাড়াও রবীন্দ্র পুরস্কার, জ্ঞানপীঠ পুরস্কার সহ আরো বহু পুরস্কার তিনি লাভ করেছেন তাঁর দীর্ঘ কর্মজীবনে। এছাড়াও, ২০১১ সালে তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার তাকে পদ্মভূষণ পুরস্কারে ভূষিত করে।