বাংলা টেলিভিশনের অতি জনপ্রিয় নাম শ্রুতি দাস। ধারাবাহিকের সংখ্যা মাত্র ২। ২০১৯ সালে ‘ত্রিনয়নী’ ধারাবাহিকে নয়ন হয়ে টেলিইন্ড্রাস্টিতে পথচলা শুরু হয় অভিনেত্রীর। প্রথম ধারাবাহিকে বিপুল জনপ্রিয়তা পান শ্রুতি। কিছুদিন কাজ থেকে অবসর নিয়ে নতুন বছরে স্টার জলসাতে ‘দেশের মাটি’ ধারাবাহিকে নোয়া হয়ে ফিরে আসেন। এই ধারাবাহিকেও নোয়া হিসেবে ব্যপক জনপ্রিয়তা পান। তবে জনপ্রিয়তা যত না হয়েছেন তার চেয়ে বেশি ট্রোলড হয়েছেন। বার বার নানানভাবে কটুক্তি শুনতে হয়েছে।
তবে সেই সব ট্রোলের যথাযথ জবাব দিয়ে ত্রিনয়নীর নয়ন কিংবা দেশের মাটির নোয়া দুই চরিত্রে সাবলীল অভিনয় দিয়ে বাঙালি দর্শকের খুব প্রিয় পাত্রী হয়ে উঠেছেন। শ্রুতির অভিনয়, গানের গলা, নাচ সবই ভালো করে রপ্ত করেছেন। সাথে খুব ভালো স্পষ্ট বক্তা হিসেবে খ্যাত শ্রুতি। কোনো কথা রাখ ঢাক করে বলা না পছন্দ অভিনেত্রীর। বরং স্পষ্ট কথায় কথা বলতে কোনো কষ্ট নেই। তবে গায়ের রং নিয়ে নানান কুমন্তব্য কখনো পিছু ছাড়েনি অভিনেত্রীর। এমনকি পরিচালক স্বর্ণেন্দু সমাদ্দারের সঙ্গে তাঁর প্রেম নিয়ে নানান কুকথা শুনতে হয়েছে। কখনো বয়স নিয়ে তো কখনো পরিচালকের সাথে প্রেম করায় কাজ পাওয়ার খোঁটা।
কখনো অভিনেত্রীর গুনকে দেখা হয়নি। দুবছরে গায়ের রঙ, প্রেম, আরো নোংরা বিষয়বস্তু নিয়ে শুধু ট্রোলড করা হয়েছে। এমনকি অভিনেত্রী যখন করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন সেই সময় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়নি। তখন ও অভিনেত্রীর মৃত্যু কামনা করা হয়েছিল। এছাড়া অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কাঁদা ছোঁড়াছুড়ি হয়। প্রায়দিনই অচেনা অচেনা কিছু কুরুচিকর ব্যক্তিদের নানান কুমন্তব্য শুনতে হয় অভিনেত্রীকে, তবে এই মানুষদের নোংরা মানসিকতার সঙ্গে এখন অনেকটাই খাপ খাইয়ে নিয়েছেন শ্রুতি। তবে সহ্যের এক সীমা থাকে।
দিন যত যাচ্ছে অভিনেত্রীর সব সহ্যের সীমার বাঁধন ভেঙে যাচ্ছে। সমস্ত সমালোচনাকে প্রথম দিকে উপেক্ষা করে চললেও, নিজের জীবন নিয়ে এত কাঁটাছেঁড়া তিনি সহ্য করতে পারছেননা। সে কারণেই বাধ্য হয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন অভিনেত্রী। ফেসবুকে কলকাতা পুলিশকে ট্যাগ করে নোংরা কমেন্টগুলি সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য দিয়েছেন অভিনেত্রী। পুলিশের তরফেও ই-মেল মারফত সব কিছু বিস্তারিত জানাতে বলা হয়েছে। কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে ‘গায়ের রং কালো হওয়ার জন্য অভিনেত্রী শ্রুতি দাসকে অনলাইনে হেনস্থা করার অভিযোগ তাঁরা পেয়েছেন। এমনকি অভিনেত্রী সমস্ত নোংরা কমেন্টের স্ক্রিনশটও শেয়ার করেছেন। এই হেনস্থার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে কলকাতা পুলিশ।
এইরকম গায়ের রঙ নিয়ে হেনস্থার শিকার শ্রুতি প্রথম নন। এর আগেও বলিউডে প্রথম দিকে বিপাশা বসু, প্রিয়াঙ্কা চোপড়াদেরও শুধুমাত্র গায়ের রং নিয়ে নানান কটাক্ষের মুখোমুখি হয়েছিলেন। তবে নিজের কাজ দিয়ে আজ তাঁরা সকলেই সাফল্য আর আত্মবিশ্বাসী। তেমনি নিজের কাজ দিয়ে শ্রুতি সকল ট্রোলারদের যোগ্য জবাব দিতে জানেন।