সকল মঙ্গলের আদি স্রোত উনি। সকল বিগ্ননাশক উনি। সকলকে তার মন বাঞ্চিত ফলও প্রদান করেন উনি। উনি পার্বতী নন্দন গণেশ, যার নাম একবার উচ্চারণে সকল পার্থিব পীড়ার অবসান ঘটে। আজ এই শুভ লগ্নে জগৎবাসী তাঁরই উপাসনায় রত। সুখ ও সমৃদ্ধির কামনায় আমরা তাঁর পদ যুগলেই নিজেদের সমর্পণ করতে চলেছি।
পৌরাণিক মতে শ্রী গণেশের জন্ম বৃত্তান্ত নিয়ে নানা রোচক কাহিনী আছে। জগৎ জননী পার্বতী একবার এক দ্বার রক্ষকের ব্যবস্থা করতে চান। নানাদিক চিন্তা করে উনি শেষ পর্যন্ত এক সিদ্ধান্ত নেন, যা অভিনব ছাড়া কিছুই নয়। গায়ের মাটি ও ময়লা থেকে সৃষ্টি করেন এক মৃত্তিকা মূর্তি। প্রাণ প্ৰতিষ্ঠা করেন ও দায়িত্ব দেন যাতে কেউ বিনা অনুমতিতে ওনার গৃহে প্রবেশ করতে না পারে। নাম রাখেন বিনায়ক। কথাটি উমাপতির কাছে পৌঁছায়। শঙ্করের সাথে বিনায়াকের সাথে ঘোর যুদ্ধ হয়। সকল অনুচরেরাও পরাভূত হন। অন্তিম দেবাদিদেব তাঁর ত্রিশূল নিক্ষেপ করে গণেশের শিরছেদ করেন। জগৎধাত্রী এই সংবাদে ক্রুদ্ধ হলেন। সকল মাতৃশক্তিকে একত্রিত করে সৃষ্টি ধ্বংসএ উদ্যত হন। কিন্তু জগৎপালক শ্রী হরির কৃপায় পার্বতী তনয় তাঁর জীবন ফিরে পায়। তবু শীর্ষস্থানে একটি হাতির শির স্থাপন করা হয়। সৃষ্টির প্রতি কণা এক নব জীবন লাভ করে। শ্রী গণেশকে সকল দেবদেবীরা আশীর্বাদ করেন। তিনি শ্ৰেষ্ঠ গণ রূপেও বিবেচিত হন। ঘরে ঘরে তাঁর অর্চনা শুরু হয়। আজ সকল ক্রিয়া তাঁকে ভিন্ন অসম্পূর্ণ।
আজ তাঁর জন্মদিন। গণেশ চতুর্থী। ধূপধুনো কাসর ও শঙ্খ নীনাদের মাঝে তাঁকে ভক্তি ডাকা। অন্যদিকে মায়েরও আসার সময় হয় গেল। সামনেই প্রাণের শারদীয়া উৎসব। আলোর রোশনাই ও মন্ত্র উচ্চারণের মাঝে যেন প্রতিক্ষণ আনন্দে ও উল্লাসে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
Written by – কুণাল রায়