নয়াদিল্লি: কৃষক আন্দোলন নিয়ে রাজনৈতিক তরজা লেগেই রয়েছে। এবার জল গড়াল সার্জিকাল স্ট্রাইক অবধি। কৃষক আন্দোলনের পিছনে চিনা বা পাক যোগের প্রমাণ থাকলে সঙ্গে সঙ্গে সরকারের সার্জিকাল স্ট্রাইক চালানো উচিত, এই বলে বিজেপিকে কটাক্ষ করল শিবসেনা।
বুধবার বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাওসাহেব দানভে দাবি করেন, দিল্লি সীমান্তে কৃষকদের কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পিছনে চিন ও পাকিস্তানের হাত রয়েছে। তিনি বলেন, ‘দিল্লিতে যে আন্দোলন চলছে, তা কেবল কৃষকদের নয়। চিন ও পাকিস্তানের হাত রয়েছে এর পিছনে। দেশের মুসলিমদেরই প্রথমে উসকানো হয়েছে। তাদের বলা হয়েছে যে এনআরসি আসছে, সিএএ আসছে, ছয় মাসের মধ্যে মুসলিমদের দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে। একজনও মুসলিমকে কি দেশ ছাড়তে হয়েছে?’
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই মন্তব্যেরই কড়া জবাব দিয়ে শিবসেনার মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত বলেন, ‘যদি কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে খবর থাকে যে কৃষক আন্দোলনের পিছনে চিন ও পাকিস্তানের হাত রয়েছে, তবে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর শীঘ্রই চিন ও পাকিস্তানের উপর সার্জিকাল স্ট্রাইক চালানো উচিত। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সেনাবাহিনীর প্রধানদের এই বিষয়ে দ্রুত আলোচনা করা উচিত।’
কেবল শিবসেনা নয়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কৃষক আন্দোলনে চিন-পাক যোগ মন্তব্যের সমালোচনা করে দিল্লির শিখ গুরুদ্বার ম্যানেজমেন্ট কমিটিও। বুধবার শিখ কমিটির প্রধান মঞ্জিন্দর সিং সিরসা একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘কৃষকেরা শান্তিপূর্ণভাবেই সীমান্তে বসে রয়েছেন, অথচ সরকার তাদের সুবিচার দিতে ব্যর্থ। এই কৃষকরা, যারা খাদ্য উৎপাদন করে, দেশের জন্য লড়াই করে এবং প্রাণ দিয়ে দেয়। তাদের সন্তানরাও দেশের জন্য প্রাণ দিয়ে দিচ্ছে। দয়া করে তাদের গায়ে দেশদ্রোহীর তকমা লাগানোর চেষ্টা করবেন না।’
দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কৃষকরা, বিশেষত পঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকরা দিল্লি সীমান্তে বিগত ১২ দিন ধরে আন্দোলন করছে। তাঁদের দাবি, কেন্দ্রের নয়া তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে হবে। এই বিষয়ে সরকার পক্ষের সঙ্গে কয়েকদফা বৈঠক হলেও আইন প্রত্যাহারে নারাজ কেন্দ্র। অন্যদিকে নিজের দাবিতে অনড় থাকবেন, একথা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কৃষক পক্ষও। ১৪ ডিসেম্বর থেকে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের পথে নামার বার্তা দিয়েছেন কৃষকরা।