ম্যাগাজিন

ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কে কিছু অজানা কথা!

Advertisement

হাস্য-কৌতুকের চলচ্চিত্রে যার নাম ধ্রুবতারা নতুন জ্বলজ্বল করছেন তিনি হলেন ভানু বন্দোপাধ্যায়। তার আসল নাম সাম্যময় বন্দ্যোপাধ্যায়। 1920 সালের 26 আগস্ট ঢাকা পূর্ববঙ্গ ব্রিটিশ রাজ্যে এখন যা বাংলাদেশে সেখানে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম জিতেন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায় বাবা ছিলেন নবাব এস্টেটের উচ্চপদস্থ চাকুরে। এবং মাতা সুনীতি বন্দোপাধ্যায়,তিনি ছিলেন সিনিয়র কেমব্রিজ পাস করা প্রথম মহিলা স্কুল ইন্সপেক্টর। ঢাকার সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল ওপরে জগন্নাথ কলেজে শিক্ষা শেষ করে তিনি কলকাতায় আসেন 1941 সালে। এরপর তিনি চাকরি করেন আয়রন এন্ড ষ্টীল কোম্পানি নামে একটি সরকারি অফিসে এবং পরে বালিগঞ্জের অশ্বিনী দত্ত রোডে তার বোনের কাছে দু বছর থাকার পর টালিগঞ্জের চারু এভিনিউতে বাস করতে শুরু করেন।

1946 সালে তিনি বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন নীলিমা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তার তিন সন্তান গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়,বাসতি ঘটক বন্দোপাধ্যায় এবং পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়।

1947 সালে তার প্রথম সিনেমা জাগরণ ও অভিযোগ। তারপরে প্রত্যেকটি বছরই তিনি অনেকগুলো সিনেমা করে আমাদেরকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল 1952 সালে পাশের বাড়ি, 1953 সালে মহারাজা নবকুমার, 1954 সালে ওরা থাকে ওধারে, 1955 সালে দস্যু মোহন, 1956 সালে একটি রাত, 1958 সালে ভানু পেলো লটারী, যমালয়ে জীবন্ত মানুষ, 1966 সালে কাল তুমি আলেয়া, গল্প হলেও সত্যি, 1967 সালে আশিতে আসিও না, 1968 সালে চৌরঙ্গী, পথে হল দেরি, বাঘিনী, 1970 সালে সাগিনা মাহাতো। 1975 সালে কবি, প্রিয় বান্ধবী। 1976 সালে নন্দিতা, 1977 সালে অসাধারণ, 1971 কালে বন্দি, 1979 সালে দেবদাস, এবং 1982 সালে প্রেয়সি, 1983 সালে শহর থেকে দূরে, এবং সর্বশেষ চলচ্চিত্র 1984 সালে শোরগোল।

চলচ্চিত্রের পাশাপাশি বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বোস খুব স্নেহ করতেন, এই বুদ্ধিমান কিশোরকে তার জন্মদিনে বাঘা বাঘা বৈজ্ঞানিক বন্ধুরা যখন বাড়িতে আসতেন। এই ছেলেটির কৌতুক নকশা শুনিয়ে জ্ঞানীগুণী অধ্যাপক কে বসিয়ে রাখতে পারতেন অন্তত ঘন্টাখানেক। আমৃত্যু অধ্যাপক বোসের এই ভালোবাসা অটুট ছিলো। কবি মোহিতলাল মজুমদার, কবি জসীমউদ্দীন, রমেশচন্দ্র মজুমদারের মাস্টারমশাইদের স্নেহ ভালোবাসা নিয়ে তিনি খুব গর্ব করতেন। সমাজতন্ত্রের আদর্শে তার গভীর বিশ্বাস ছিল গর্ব করে বলতেন আমার মায়ের বাবা আমার নাম রেখেছিলেন সাম্যময়। তিনি বলতেন “আই এম আ কমিউনিস্ট , আই বেয়ার ইট ইন মাই নেম।”

সেই সময় বিখ্যাত তারকা যেমন উত্তম কুমার সুচিত্রা সেন এদের সঙ্গেও তিনি বেশ জনপ্রিয়তায় সমানে সমানে টেক্কা দিতেন। তাকে দেখার জন্য ভিড় জমিয়ে সাধারণ মানুষ। তিনি পিজি উড হাউস এর লেখা আর চার্লি চ্যাপলিন এর ছবির খুব বড় ভক্ত ছিলেন।

অবশেষে এই কিংবদন্তি শিল্পীর 4 th মার্চ 1983 সালে পরলোকগমন করেন । বাংলার চলচ্চিত্র জগতে এক নক্ষত্রের অবসান হয়।

Written By – শ্রেয়া চ্যাটার্জি

Related Articles

Back to top button