কলকাতা: কয়েক বছর আগেই রাজনীতিতে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের যোগ দেবেন কিনা, এই প্রশ্ন তাঁকে করা হলে তিনি উত্তর দিতেন, ‘রাজনীতিতে পা নৈব নৈব চ!’ কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি বদলেছে। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক এই মুহূর্তে বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট। বিসিসিআইয়ের মসনদে বসার আগে দীর্ঘক্ষন অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করতে দেখা গিয়েছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে। তারপর বিসিসিআই মসনদে সৌরভের নাম লেখার কথা ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকেই বিজেপির রাজনীতির ময়দানে সৌরভের পা দেওয়া নিয়ে জল্পনা উঠেছে বিভিন্ন সময়ে। কখনও সেই জল্পনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন মহারাজ, তো কখনও আবার উস্কে দিয়েছেন। কিন্তু খোলাখুলিভাবে এখনও পর্যন্ত এ ব্যাপারে মুখ খোলেননি ‘প্রিন্স অফ ক্যালকাটা’। তবে আজ, রবিবার যা ঘটল তাতে জল্পনা আরও একবার উঠে গেল সৌরভকে নিয়ে। কারণ, রবিবাসরীয় বিকেলে সৌরভের গাড়ির চাকা গড়িয়েছে রাজভবনের দিকে। রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের সঙ্গে দেখা করার জন্য আজ রাজভবনে পা রাখেন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।
কিন্তু কেন? খেলা প্রসঙ্গে রাজ্যপালের সঙ্গে কি কোন দরকার আছে তাঁর? নাকি প্রসঙ্গটা রাজনৈতিক? এই সমস্ত প্রশ্নই এখন সৌরভ অনুগামী থেকে শুরু করে সকল সাংবাদিকদের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। কিন্তু উত্তর মিলবে কি? বোধ হয় না। কারণ, রাজভবনে ঢোকার মুখে একইভাবে সৌরভ এই প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেলেন। বললেন, ‘রাজ্যপালের সঙ্গে এই সাক্ষাৎ স্রেফ একটা সৌজন্য সাক্ষাৎ।’ আজ বিকেল সাড়ে চারটের কিছু পরে রাজভবনের উত্তর গেট দিয়ে সৌরভের গাড়ি প্রবেশ করে রাজভবনে। ড্রাইভারের পাশের সিটে বসেছিলেন মহারাজ। বিসিসিআই প্রেসিডেন্টের গাড়ি দেখে সাংবাদিকদের ভির স্বাভাবিকভাবেই লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু সাংবাদিকরা হাজার হাজার প্রশ্ন সৌরভের দিকে ছুড়ে দিলেও গাড়ি থেকে সৌরভ শুধু এটুকুই বলেছেন, রাজ্যপালের সঙ্গে তার দেখা একটা সৌজন্য সাক্ষাৎ মাত্র। বাকি কথা তিনি বেরিয়ে এসে বলবেন। কিন্তু আধঘণ্টার বৈঠক দেড় ঘণ্টা পরেও শেষ হয়নি বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে।
তাহলে কি এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা হচ্ছে রাজ্যপাল-সৌরভের মধ্যে? সৌরভ নিজের জমি ফিরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন রাজ্য সরকারকে সেই প্রসঙ্গে আলোচনা নাকি প্রসঙ্গ অন্য? বেশ কিছুদিন আগে রাজ্য সফরে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলে গিয়েছেন, ২০০-র বেশি আসনে বিধানসভা নির্বাচন জিতবে বিজেপি। আর তারপর রাজ্যের ভূমিপুত্র হবে আগামী দিনের মুখ্যমন্ত্রী। সেই ভূমিপুত্র কি সৌরভ? এই প্রশ্ন সেদিন থেকেই রাজনৈতিক আকাশে-বাতাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর আজ সৌরভের রাজভবনে প্রবেশ আরও একবার এই প্রশ্নকে উস্কে দিল, এমনটা বলাই যায়।