বর্তমান সময়ে পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষিত যুবক-যুবতীদের বেকারত্বের হার ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারি চাকরির সুযোগ পাওয়া যেন একপ্রকার দূরাশার মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। বহু মেধাবী ও যোগ্য প্রার্থী সঠিক কর্মসংস্থানের অভাবে বেকার জীবন কাটাচ্ছেন। তবে এবার এই পরিস্থিতি বদলানোর উদ্যোগ নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
বাড়িতে বসেই চাকরির সুযোগ
রাজ্যের শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য সরকার। জানা যাচ্ছে, এবার জেলা কর্মবিনিয়োগ কেন্দ্রের উদ্যোগে পর্যটন শিল্পে কাজের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। এ উদ্যোগের ফলে একদিকে যেমন বেকার যুবসমাজের কর্মসংস্থান হবে, অন্যদিকে হোটেল, হোমস্টে ও রিসর্টের জন্য দক্ষ কর্মী পাওয়া যাবে সহজেই।
পর্যটন শিল্পে চাকরির নতুন দিশা
রাজ্যের পর্যটন শিল্পের বিকাশে বিশেষ ভূমিকা নিচ্ছে ঝাড়গ্রাম। বর্তমানে এটি পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। পর্যটকদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে ঝাড়গ্রামকে আধুনিক পর্যটন হাব হিসেবে গড়ে তোলার কাজ চলছে। এর ফলে হোটেল, হোমস্টে, রিসর্ট ব্যবসার প্রসার ঘটছে এবং বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
স্থানীয় যুবকদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ
ঝাড়গ্রামের অনেক তরুণ-তরুণী চাকরির জন্য দূরে যেতে বাধ্য হন। তবে এবার তাঁদের জন্য নিজের এলাকায় থেকেই কাজের সুযোগ করে দিচ্ছে সরকার। গত মাসের শেষ দিকে ঝাড়গ্রাম জেলা কর্মবিনিয়োগ কেন্দ্রের উদ্যোগে পর্যটন শিল্পে নিয়োগের জন্য বিশেষ ‘জব ড্রাইভ’ আয়োজন করা হয়েছিল।
এই জব ড্রাইভে প্রায় ৬৫ জন শিক্ষিত যুবক-যুবতী অংশগ্রহণ করেছিলেন। বিভিন্ন হোটেল ও হোমস্টের মালিকরা সরাসরি তাঁদের ইন্টারভিউ নেন এবং ম্যানেজার, হাউসকিপিং, রাঁধুনি-সহ বিভিন্ন পদে কর্মী বাছাই করেন। ইন্টারভিউ শেষে যোগ্য প্রার্থীদের চাকরিতে নিয়োগ করা হয়।
সরকারের বক্তব্য
ঝাড়গ্রাম জেলা কর্মবিনিয়োগ কেন্দ্রের উপ-অধিকর্তা অরুনাভ দত্ত বলেন, “জেলায় পর্যটন শিল্পকে কেন্দ্র করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে আমরা উদ্যোগী হয়েছি। এর আগে বিভিন্ন জেলায় জব ড্রাইভ হলেও, এবারই প্রথম ঝাড়গ্রামের ছেলেমেয়েদের জন্য নিজেদের জেলায় কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন হোটেল, হোমস্টে ও রিসর্টের মালিকরা উপস্থিত থেকে উপযুক্ত কর্মী বাছাই করেছেন, যা এই শিল্পের আরও বিকাশ ঘটাবে।”
এই উদ্যোগের ফলে ঝাড়গ্রামের পর্যটন শিল্প যেমন আরও শক্তিশালী হবে, তেমনি স্থানীয় যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের সুযোগও বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই পদক্ষেপ আগামী দিনে আরও কর্মসংস্থান তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলে মনে করা হচ্ছে।