উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পর থেকেই যেন বিতর্ক লেগেই রয়েছে সারা রাজ্যে। প্রত্যেকটি জেলায় প্রায় একই রকম পরিস্থিতি। কোথাও কোথাও স্কুলে চলছে বিক্ষোভ আবার কোথাও ছাত্র-ছাত্রীরা সরাসরি উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের অফিসে এসে করছেন বিক্ষোভ। জায়গায় জায়গায় প্ল্যাকার্ড হাতে দেখা যাচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের। বাসন্তীতে একটি এলাকায় দেখা গেল স্কুলের সামনে বিক্ষোভরত ছাত্র-ছাত্রীদের ঢল। তাদের দাবি, তাদেরকে পাস করাতেই হবে না হলে তারা হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যা করবেন। জেলায় জেলায় রকম চিত্র দেখার পরেই এবারে নড়েচড়ে বসল স্কুল শিক্ষা দপ্তর।
লাগাতার বিক্ষোভের জেরে এবার সমস্ত জেলাশাসক কে চিঠি দিলেন স্কুল শিক্ষা সচিব। জানানো হলো অবিলম্বে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য এসডিও এবং বিডিওদের কাজ করতে হবে। এমনকি সমস্ত প্রশাসনিক কর্তাদের সমস্ত স্কুল পরিদর্শন করে দ্রুত রাজ্যকে সেই রিপোর্ট নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে ওই নির্দেশিকায়। সূত্রের খবর, স্কুল শিক্ষা দপ্তরের সচিব মনীশ জৈন সোমবার সমস্ত জেলাশাসক দের উদ্দেশ্যে এই চিঠি লিখেছেন। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন আগামী ৩১ শে জুলাই এর মধ্যে এই সমস্ত প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে জেলাশাসকদের।
ইতিমধ্যেই সারা রাজ্যে প্রায় ১৮ হাজারের বেশি পরীক্ষার্থী দ্বাদশ এর নম্বর নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীরা জায়গায় জায়গায় বিক্ষোভ শুরু করেছেন। পরীক্ষা না নিয়ে কি করে তাদেরকে ফেল করানো হলো সেই অভিযোগ নিয়ে তারা সোচ্চার। এই ধরনের অভিযোগ জেলাভিত্তিক কেমন রয়েছে সেটা পরবর্তী সময়ে জেলাশাসক দের জানাতে হবে। তবে সবার আগের কাজ হল, এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মাঝখানে আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থায় যেন কোন রকম ভাবে সমস্যা না হয় সেই দিকে দেখা। সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই জেলাশাসকদের উদ্দেশ্যে নির্দেশিকা জারি করেছেন শিক্ষা সচিব।
রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ থেকে শুরু করে পাশ করিয়ে দেওয়ার দাবিতে জায়গায় জায়গায় প্ল্যাকার্ড ক্যাম্পেইন, কোথাও আবার স্কুলে গিয়ে ভাঙচুর তো কোথাও রাস্তা অবরোধ। সম্পূর্ণ পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি বর্তমানে একই রকম। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য বিশেষ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সংসদ। জানানো হয়েছে পড়ুয়াদের স্বার্থে নতুন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে স্কুল শিক্ষা পর্ষদ। কিন্তু তবুও পরীক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সামলাতে নাভিশ্বাস উঠছে প্রশাসনের। এই পরিস্থিতিতে এবার জেলাশাসকদের কাজে লাগাতে চলেছে স্কুল শিক্ষা দপ্তর। কোথাও যেন কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে যায় সেই দিকে খেয়াল রাখাই হবে তাদের মূল কাজ। তার পাশাপাশি, পরীক্ষার্থীদের রেজাল্ট নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার কথা ভাবছে রাজ্য, এমনটাই সূত্রের খবর।