বর্তমান সময়ে কমবেশি সকলেই স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং সোশ্যাল মিডিয়া কথাটির সাথে অধিক পরিচিত। আসলে এখনকার দিনে আট থেকে আশি সকলেই কোনো না কোনো সোশ্যাল মিডিয়াতে অ্যাকাউন্ট খুলে রেখেছেন। দৈনন্দিন কাজের ফাঁকে একটু সময় পেলে এই সোশ্যাল মিডিয়ার দুনিয়াতে বিভিন্ন ভিডিও এবং ছবি দেখে সময় অতিবাহিত করেন নেটিজেনরা। বিভিন্ন ধরনের ভিডিও এই সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়। কোনো একটি ছোট ঘটনাও এই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মুহূর্তের মধ্যে দেশ থেকে দেশান্তরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। যারা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেন তারা সকলেই প্রায়ই “আমব্রেলা গার্ল” এর নাম অবশ্যই শুনেছেন।
মাত্র কয়েক সেকেন্ডের একটি ভিডিও বদলে দিয়েছিল আমব্রেলা গার্ল এর জীবন। নেটমাধ্যম থেকে সংবাদমাধ্যমের খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিলেন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সুদীপ্তা বিশ্বাস। উচ্চমাধ্যমিকে ইংরেজিতে উত্তীর্ণ হতে না পেরে স্কুলের সামনের রাস্তায় ধরনায় বসে ছিলেন এই পরীক্ষার্থী। সঙ্গে ছিল আরো কয়েকজন সহপাঠী। অবস্থান চলাকালীন এই মেয়েটি দাবী করেছিল যে ইংরেজিতে তাদের অনৈতিকভাবে ফেল করানো হয়েছে। তবে ক্যামেরার সামনে তাকে আমব্রেলা বানান জিজ্ঞেস করা হলে সে সদুত্তর দিতে পারেনি।
তার বানান ভুল বলার ভিডিও মুহূর্তের মধ্যে ইন্টারনেট দুনিয়ার শিরোনামে চলে আসে। শুরু হয় ট্রোল, টিপ্পনী, উপহাস এবং সমালোচনা। এমনকি পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয় যে ওই অষ্টাদশীর বাড়ি থেকে বেরোনো অবধি দুষ্কর হয়ে ওঠে। তবে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে তার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার স্কুটনি ও রিভিউ এর ফলাফল। ইংরেজিতে পাশ করতে পেরেছেন সুদীপ্তা। বর্তমানে নদীয়ার বীরনগর শিবকালী গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স নিয়ে ভর্তি হয়েছে সে।
জানা গিয়েছে, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার খাতা স্কুটনি হওয়ার পর সুদীপ্তা বিশ্বাস ইংরেজিতে পেয়েছেন ৪৪। মেয়েটি বাংলায় পেয়েছেন ৪৯, ইতিহাসে ৫৩, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ৫৭ ও সংস্কৃতে ৬৫। সে এখন রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স নিয়ে রানাঘাট কলেজে ভর্তি হয়েছে। এই প্রসঙ্গে মেয়েটির বাবা সুকুমার বিশ্বাস বলেছেন যে তার মেয়েকে যথেষ্ট হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে এবং সেইজন্য সে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিতেও যাচ্ছিল। মেয়েকে নিয়ে যারা রসিকতা করেছে তাদের কাছে যোগ্য জবাব মেয়েটির স্কুটনির ফলাফল বলেই মনে করেছেন তার বাবা। এমনকি সুদীপ্তা ভবিষ্যতে শিক্ষকতা করবেন বলেই ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বাবা সুকুমার বিশ্বাস।