নয়াদিল্লি: কেন্দ্রের প্রকাশ করা নতুন তিনটি কৃষি আইনের বিরোধিতা করে দীর্ঘ বেশ কয়েকদিন ধরে চলছে কৃষক আন্দোলন। হরিয়ানা, পাঞ্জাব, কর্ণাটক থেকে হাজার হাজার কৃষক পায়ে হেঁটে ‘দিল্লি চলো’-র ডাক দিয়েছিল। সেই পরিপ্রেক্ষিতে লাগাতার চলছে কৃষক আন্দোলন। সরকার এবং ভারত কৃষক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে দফায় দফায় বৈঠক হওয়ার পরেও মেলেনি সমাধান সূত্র। ইতিমধ্যেই দিল্লির পারদ নামতে শুরু করেছে। একে করোনা পরিস্থিতি, তার ওপর রাজধানীর বুকে প্রচণ্ড ঠান্ডায় মৃত্যু হল আন্দোলনরত এক কৃষকের। আজ, বৃহস্পতিবার এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্তে। বুধবারও বিক্ষোভের কেন্দ্রস্থল পঞ্জাব-হরিয়ানা সীমান্তের কাছে এক শিখ ধর্মগুরুর আত্মহত্যার খবর মেলে। এমন পরিস্থিতিতে ক্রীড়াবিদরা এই আন্দোলনকে সমর্থন করেছে। আর এবার এই আন্দোলনকে স্বীকৃতি দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট।
গতকাল, বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে কেন্দ্রের প্রকাশ করা কৃষি আইনের বিরোধিতায় কৃষক আন্দোলনের যথার্থতাকে সমর্থন করা হয়। বলা হয়, কৃষি বিশেষজ্ঞ ও কৃষক ইউনিয়নের নেতাদের নিয়ে একটি নিরপেক্ষ ও স্বাধীন প্যানেল তৈরি করে বিষয়টি নিষ্পত্তির কথা ভাবছে তারা। এর আগে বুধবার কৃষক নেতাদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করার প্রস্তাব দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। আর গতকাল এই মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি এস এস বোবাদের বেঞ্চ জানিয়ে দিল, কৃষকদের আন্দোলন করার মৌলিক অধিকার রয়েছে। সেই অধিকার কেড়ে নেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। কেন্দ্রের প্রকাশ করা কৃষি আইন বৈধ কিনা, তা বিচার পরে হবে। আগে কৃষক আন্দোলনের মৌলিক অধিকার প্রধান বিচার্য বিষয় এটা বল প্রযোজন। আইনের বৈধতা পরেও বিচার করা যাবে। এভাবেই কৃষক আন্দোলন কে মান্যতা দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
তবে এই আন্দোলন অহিংস হতে হবে এমনটা সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তবে কৃষি আইন বৈধ কিনা, এই নিয়ে বক্তব্য কবে রাখা হবে, তা নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। তিন সপ্তাহ ধরে চলা এই কৃষক আন্দোলনের ফলে যাতায়াত, যান চলাচল এবং মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ব্যাঘাত, একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেইসব মামলার শুনানিকে একত্রিত করেই এই শুনানি চলছে। আর সেখানে কৃষক আন্দোলনকে সুপ্রিম কোর্টের মান্যতা দেওয়া কৃষকদের নৈতিক জয় বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।