তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারীর গতিবিধি নিয়ে রীতিমতো ধন্দে রয়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। শহীদ সমাবেশে নন্দীগ্রামের সভায় তার পোস্টারের পাশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেখা গিয়েছিল। কিন্তু তারপরেই এবার মুর্শিদাবাদের খরগ্রামে দলীয় নেতার স্বরণসভাতে শুভেন্দু অধিকারী যোগদিলেন তৃণমূলের পতাকা ছাড়া। এদিন দলীয় কর্মীর মৃত্যুতে আয়োজিত স্মরণসভায় শুভেন্দু অধিকারীকে দেখা গেলেও তৃণমূলের দলীয় পতাকা দেখা যায়নি।
রবিবার বিকেলে মারগ্রাম হাই মাদ্রাসা মাঠে পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতিতে একটি সভার আয়োজন করা হয় যাতে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের অনেকেই। অনুষ্ঠানটি রাখা হয়েছিল মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের বনভূমি কর্মাধ্যক্ষ মফিজ উদ্দিন মন্ডলের স্মরণসভা হিসেবে। এলাকার মানুষ এবং মফিজ উদ্দিনের পরিবারের লোকজন একসাথে এই সভাটি আয়োজন করেছিল। এই সভাতে শুভেন্দু অধিকারী উপস্থিত থাকলেও তিনি দলের পতাকা সঙ্গে করে আনেন নি।
উক্ত সভায় শুভেন্দু অধিকারী মফিজ উদ্দিন মন্ডলের কাজের প্রশংসা করে তার প্রতি সম্পূর্ণ সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। তার পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন শুভেন্দু। শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতি সত্ত্বেও এই সভায় তৃণমূলের কোন শীর্ষ নেতা উপস্থিত ছিলেন না। এমনকি, খরগ্রামের বিধায়ক আশীষ মার্জিতকেও দেখা যায়নি এই সভায়। বারবার বলা হয়েছে এটি একটি স্মরণ সভা এবং এলাকার মানুষ এবং মফিজ উদ্দিনের পরিবার একসাথে মিলে এই সভা আয়োজন করেছে।
তবে এদিনের এই সভা থেকে কোনরকম রাজনৈতিক বার্তা দেননি শুভেন্দু। সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং অন্যান্য জায়গায় প্রচার করা হয়েছিল, শুভেন্দু অধিকারী হতে চলেছেন এই সভার প্রধান আকর্ষণ। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতিতে তৃণমূলের দলীয় পতাকা না থাকায় জল্পনা বেড়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। শুভেন্দু অধিকারী কে নিয়ে ক্রমাগত টানাপোড়েন চলছে বিজেপি এবং তৃণমূল এর মধ্যে। দুর্গা পুজোর পরে বিজয় সম্মেলন করলেও শুভেন্দু অধিকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দলের কোনরকম নিদর্শন রাখেননি।
তার অনুগামীরাও ‘ দাদার অনুগামী ‘ হিসাবেই বিজয় সম্মেলনগুলির প্রচার চালিয়ে ছিল। কিন্তু, একটি জনসভার আমন্ত্রণপত্রে শুভেন্দু অধিকারী গেরুয়া রং ব্যবহার করেছিলেন। পাশাপাশি তিনি একটি ছবি দিয়েছিলেন যেখানে তিনি রাজস্থানী স্টাইলে পাগড়ি পরে দাঁড়িয়ে আছেন। সেইখান থেকেই প্রশ্ন উঠেছিল তৃণমূল ছেড়ে গিয়ে এবারে কি শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেবেন? সেই জল্পনার পরিপ্রেক্ষিতে শুভেন্দু অধিকারীর বাবা শিশির অধিকারী বলেছিলেন,” ওরা ( বিজেপি ) নতুন দোকান খুলেছে। সেখানে পচা মাল আছে নাকি ভালো মাল তার পরের কথা। যারা দোকানদার তারা অনেককেই ডাকতে পারেন। আসুন, আমি তো বলছি, পরীক্ষা করে মাল কিনুন। আমাদের সঙ্গে থাকুন।”