আসন্ন বাংলা বিধানসভা নির্বাচনের আগে নভেম্বর মাসের শেষের দিকটা খুব একটা ভালো যাচ্ছিল না তৃণমূল কংগ্রেসের। শুভেন্দুর মন্ত্রিত্ব পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর বঙ্গ রাজনীতিতে বিভিন্ন জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়। এরইমধ্যে বিরোধী গেরুয়া শিবির সুযোগ বুঝে শুভেন্দু ইস্যু নিয়ে বারংবার শাসকদলের বিরুদ্ধে আঘাত হানে। কিন্তু বছরের শেষ মাসের প্রথম দিনটা বেশ ভালোভাবেই শুরু হল তৃণমূলের জন্য। গতকাল রাতে কলকাতায় শুভেন্দু অভিষেক সৌগত ও প্রশান্তের হাই ভোল্টেজ দুই ঘন্টার বৈঠক হয়। তারপরেই সৌগত রায় জানান, “কথাবার্তার মাধ্যমে ভুল বোঝাবুঝি কেটে গেছে এবং সব সমস্যা মিটে গেছে।”
সূত্রের খবর অনুযায়ী, গতকালই স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোন থেকে শুভেন্দু অধিকারীর সাথে কথা বলে। একসঙ্গে থেকে কাজ করার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সাথে আগামী ৭ ডিসেম্বর জনসভা বৈঠকে তার পাশে শুভেন্দুকে থাকার আহ্বান জানান। গতকাল উত্তর কলকাতায় সৌগত রায়ের বন্ধু স্থানীয় এক ব্যক্তির বাড়িতে হাই ভোল্টেজ মিটিং হয়। মিটিং শেষে সাংবাদিকদের সমস্ত প্রশ্নের জবাব দেন খোদ সৌগত রায়। কিন্তু বেশিরভাগ প্রশ্নের জবাব দিলেও, এখন একটা খটকা থেকেই যাচ্ছে। শুভেন্দু মন্ত্রিত্ব পদ ছেড়ে দিলেও দল ছাড়েনি। কিন্তু কিছু শর্তের ভিত্তিতে আস্তে আস্তে দলের সাথে দূরত্ব বাড়ছিল তার। সেই শর্ত রফা না হয়ে কি করে শুভেন্দু আবার দলে আগের মত কাজ করবে? সেটাই এখন প্রশ্ন।
তবে তৃণমূলকে শুভেন্দু সব বার্তা মেনে নিয়েছে? না শুভেন্দু নিজেই তার পুরনো শর্ত ভুলে গেলো? এই নিয়ে এখনও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে সূত্র মারফত খবর, গতকালের বৈঠকে সৌগত রায়, সুদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক ব্যানার্জি ও তৃণমূলের ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের সাথে খোলাখুলিভাবেই কথা হয় শুভেন্দুর। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, পাঁচ জেলার যেখানে তিনি কাজ করেন সেখানে তিনি অন্য কারও হস্তক্ষেপ চান না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তৃণমূল শুভেন্দু অধিকারী কে তাদের দলের সম্পদ মনে করে। শুভেন্দুর যুব সমাজে জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক শক্তিকে কাজে লাগাতে চাই তৃনমূল। তাই হয়তো নির্দিষ্ট কিছু শর্তে শেষ পর্যন্ত রফায় করে নিয়েছে তৃণমূল।
অন্যদিকে এখনও অব্দি শুভেন্দু নিজে থেকে তার অবস্থান স্পষ্ট করেনি। আজকে হয়তো তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে পারেন। ভবিষ্যতে তিনি মন্ত্রিত্ব পদ ফিরিয়ে নেবেন নাকি বা কি করে কাজ করবেন তা একদিকে যেমন তার সিদ্ধান্ত আবার ঠিক অন্যদিকে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি সিদ্ধান্ত নেবেন তার উপর নির্ভর করছে।