গতবছর আম্ফান ঘূর্ণিঝড় পশ্চিমবঙ্গ এবং তার সংলগ্ন রাজ্যগুলির উপর দিয়ে প্রবল পরাক্রমে বয়ে গিয়েছিল। সেই ঝড়ে উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। গতবছরের পর চলতি বছরে আবারও আশঙ্কা সৃষ্টি করছে আরব সাগরের বুকে তৈরি হওয়া সাইক্লোন “টাউকটে”। আবহবিদদের মতে এই ঘূর্ণিঝড় আরব সাগরে ঘনীভূত নিম্নচাপের ফল। এই ঘূর্ণিঝড় আগামী ১৬ মে ভারতের ভূখণ্ডের পশ্চিম উপকূলগুলিতে আছড়ে পড়তে পারে।
ঘূর্ণিঝড় প্রসঙ্গে আইএমডি সর্তকতা জারি করে বলেছে, আরব সাগরের তৈরি হয়েছে গভীর নিম্নচাপ যা বর্তমানে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে ঘূর্ণিঝড়ের প্রকৃতি দেখে মনে হচ্ছে এই ঝড় মহারাষ্ট্র এবং গুজরাটে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ক্ষয়ক্ষতি করবে। এমনকি বাড়তি সতর্কতার জন্য লাক্ষাদ্বীপে আগে থাকতেই ঝড় সম্বন্ধিত ক্ষয়ক্ষতির জন্য প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লাক্ষাদ্বীপের সমুদ্রের বড় বড় ঢেউ উত্তাল হতে পারে এবং সাইক্লোন ভয়াবহ আকার ধারণ করলে তা ভূমিতে আছড়ে পড়বে। এখন থেকেই লাল সর্তকতা জারি করা হয়েছে তামিলনাড়ু, কর্ণাটক এবং কেরল রাজ্যে।
আগে থাকতেই সতর্কতার জন্য কেরল, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র এবং গুজরাটে এনডিআরএফ এর উদ্ধারকারী দল মোতায়েন করা হয়েছে। নিম্নচাপের প্রকৃতি দেখে ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স এর ৫৩ টি দল ইতিমধ্যেই সাইক্লোন পরবর্তী পরিস্থিতি এবং ক্ষয়ক্ষতি সামলাতে কাজে লাগানো হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে আগামী ১৮ মে আরব সাগরের বুকে তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপ গুজরাটের উপকূলে পৌঁছে যাবে। এই ঘূর্ণিঝড়ের ফলে গুজরাটের কচ্ছ এবং সৌরাষ্ট্র অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
গতকাল থেকেই কেরলের উপকূলবর্তী অঞ্চলেগুলিতে বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে গিয়েছে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ ক্রমশ ভয়াবহ হচ্ছে। কেরলে হলুদ সর্তকতা জারি করেছে সরকার। এছাড়া মহারাষ্ট্র উপকূলে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। তাদের কঠোর ভাবে ১৫ মে অর্থাৎ আগামীকাল থেকে সমুদ্র যেতে বারণ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে মহারাষ্ট্রের কোলাপুর, পুনে, সিন্ধুদূর্গ, রত্নাগিরি, সাতারা, সাঙ্গলি, শোলাপুর ইত্যাদি জায়গায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে গেছে। সেই সাথে আজকে ওইসব অঞ্চলে ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বইছে যা আগামী ১৬ তারিখে ৮০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা হতে পারে। এছাড়া লাক্ষাদ্বীপে লাল সর্তকতা জারি করা হয়েছে।