শিক্ষক দিবস: সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য!
শিক্ষক এই নামটি শুনলেই আমাদের যেন সেই মনে পড়ে স্কুলের বেঞ্চ, স্কুলের টেবিল, ব্ল্যাকবোর্ড, চক, খাতা, বই। পড়া পেরে কখনো শিক্ষকের আশীর্বাদের হাত মাথায়, আবার পড়া না পারলে কান মোলা খাওয়া। অনেকদিন পরে রাস্তার মাঝে দেখা হলে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করা। শিক্ষক হলেন আমাদের এক গুরু। মা বাবার পরেই শিক্ষকের স্থান। বছরের 5 সেপ্টেম্বর দিনটির শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। কিন্তু এর একটা ইতিহাস রয়েছে চলুন জেনে নিই এর ইতিহাস কি?
সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণান একজন ভারতীয় দার্শনিক এবং রাজনীতিবিদ ছিলেন যিনি ১৯৬২ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত ভারতের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এর আগে তিনি ১৯৫২ থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি ছিলেন। তিনি পেশায় একজন শিক্ষক ছিলেন, তবে তাঁর রাজনীতিতে প্রথম পদক্ষেপ অনেক দেরীতে। দক্ষিণ ভারতের এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করে তিনি বুদ্ধিমান এবং উজ্জ্বল ছেলে হয়ে উঠেন। তাঁর জ্ঞানের প্রতি আগ্রহ বরাবরই ছিল। তাঁর রক্ষণশীল বাবা তাঁকে ইংরেজি শেখাতে চাননি এবং আশা করেছিলেন যে তিনি পুরোহিত হবেন। তবে যুবক রাধাকৃষ্ণণ তাঁর পড়াশুনায় দক্ষতা অর্জন করেছিলেন এবং মাদ্রাজ ক্রিশ্চিয়ান কলেজে স্কলারশিপ নিয়ে পড়েন এবং দর্শনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি একাডেমিক কেরিয়ার শুরু করেন এবং সময়ের সাথে সাথে নিজেকে তুলনামূলক ধর্ম ও দর্শনের বিশ শতকের বিশিষ্ট পন্ডিত হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তিনি ভারত ও পশ্চিম উভয় ক্ষেত্রেই হিন্দু ধর্মের বোঝাপড়া গঠনে প্রভাবশালী ছিলেন। ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পরেই তিনি রাজনীতিতে যুক্ত হন। ইউনেস্কোতে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করার পরে, তাকে দেশের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি এবং পরে রাষ্ট্রপতি করা হয়। তাঁর রাষ্ট্রপতি হবার পরই তাঁর ছাত্ররা তাঁর জন্মদিনটিকে সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ দিবস হিসেবে পালন করতে চায়, কিন্তু সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ তা চাননি। তিনি বলেছিলেন যদি সত্যিই আমার জন্মদিনটিকে, বিশেষ কোনো কারণে পালন করতে হয় তাহলে সেটা শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা উচিত। তাই তাঁর জন্মদিন, ৫ সেপ্টেম্বর সারা ভারতে শিক্ষক দিবস হিসাবে পালিত হয়।
Written by – শ্রেয়া চ্যাটার্জী