পরিবেশ বন্ধু চড়ুই পাখি আজ উধাও হতে চলেছে, কিছু দিন পরে এদের শুধুই ছবিতে দেখাতে হবে
শ্রেয়া চ্যাটার্জি : শহরাঞ্চলে উচু উচু বাড়িতে ঢুকে মাকড়সা খেয়েই পালাত, কখনো পাখার ব্লেড এ ধাক্কা খেয়ে মারা যেত। তবে এই পাখিটিকে বর্তমান প্রজন্মকে বোধহয়, চিড়িয়াখানায় গিয়ে দেখতে হবে বা ছবিতে দেখাতে হবে। কারণ তারা এই পাখিটার সঙ্গে খুব একটা পরিচিত নয়। সেটি হলো চড়ুই পাখি। আজ থেকে পনেরো, কুড়ি বছর আগেও এই পাখিটি কে ঘরের মধ্যে অনায়াসে ঘুরে বেড়াতে দেখা যেত। কড়িবরগার ঘরে কাঠের ফাঁকে কিংবা চিলেকোঠার ঘরে এদের বাসা করতে দেখা যেত। কিন্তু এখন আর এদের প্রায় দেখা যায় না বললেই চলে। হালকা ধূসর বর্ণের প্রচন্ড চঞ্চল প্রকৃতির এই পাখি। পরিবেশবান্ধব ও বটে পোকামাকড় খেয়ে এরা বেশ উপকার করে। গ্রামাঞ্চলে আগাছা পোকামাকড় খেয়ে কৃষকের বন্ধু এরা।
কিন্তু দিনে দিনে চড়ুইয়ের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। চড়ুই কেন চড়ুই এর সাথে সাথে কাঠবিড়ালির সংখ্যা কমছে। তাই এদেরকে সংরক্ষণ করা খুব প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। ২০ মার্চ বিশ্ব চড়ুই দিবস পালন করা হয়। এই পাখিটি কেউ কোনোদিন সংরক্ষণ করার কথা ভাবতে হবে তা গত পনেরো, কুড়ি বছর আগের মানুষটা স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি। কিন্তু তার সংখ্যা এমন কমে যাচ্ছে কেন? এর কারণ হলো বসতি এলাকার মোবাইলের টাওয়ার বসানো এর ক্ষতিকারক লো-লেভেল রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি চড়ুই পাখি স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি করছে। মেট্রোপলিটন শহর যেমন ব্যাঙ্গালোর, চেন্নাই, দিল্লি, হায়দ্রাবাদ, কোলকাতা, মুম্বাই এর সংখ্যা বেশ কমেছে।
চড়ুই এর সংখ্যা দিনে দিনে কমে গেলেও একটা সুখবর আছে। বাড়ছে আমাদের জাতীয় পাখির সংখ্যা অর্থাৎ ময়ূরের সংখ্যা। ময়ূর যেহেতু জাতীয় পাখি তাই এর সংখ্যা বাড়লেও তাকে তো আর আনাচে কানাচে সব জায়গায় দেখতে পাওয়া যাবে না। তাকে দেখতে গেলে আপনাকে নয় চিড়িয়াখানা যেতে হবে, আর না হলে কোন সংরক্ষণাগারে আপনাকে গিয়ে দেখতে হবে। আমাদের বসত বাড়িতে কিন্তু চড়ুই কে ছাড়া বেশ ফাঁকা ফাঁকা লাগে। নতুন প্রজন্ম এটা নিয়ে হয়তো ভাবতে পারে না, কারণ তারা চড়ুই পাখি বাসাওলা কোন বাড়ি দেখেনি। কড়িবরগার কাঠ থেকে ঝুলছে একটি খড়ের টুকরো বা তাদের কিচিরমিচির শব্দে বাড়িটা মুখরিত হয়ে আছে, এসব সবটাই এখন অতীত।