কেরল : মেয়েদের ধর্মস্থানে প্রবেশ নিয়ে বিধিনিষেধের ব্যাপারটা অনেকদিনের। সব ধর্মেই এই ব্যাধিটি রয়েছে এবং এই ব্যাধি নিরাময়ে মেয়েদের লড়াইও অনেকদিনের। এমনই এক দীর্ঘ লড়াইয়ের পর শবরীমালা আয়াপ্পা মন্দিরের দরজা খুলে গেলো নারীদের জন্য। কিন্তু মন্দিরের মধ্যে মহিলাদের সুরক্ষা ব্যাপারটি সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ করলো কেরালা সরকার।
কেরালা হাইকোর্টের ১৯৯১ সালের নির্দেশ অনুযায়ী ১০ থেকে ৫০ বছরের ঋতুমতী নারী ওই মন্দিরে প্রবেশ করতে পারতো না। মন্দিরের দেবতা আয়াপ্পা ব্রহ্মচর্য মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। সন্দেহজনক নারীদের মন্দির কর্তৃপক্ষের কাছে বয়সের প্রমাণপত্র দাখিল করতে হতো। এই প্রথার বিরুদ্ধে সুপ্রীম কোর্টে মামলা করা হলে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সুপ্রীম কোর্ট এক ঐতিহাসিক রায়ের মধ্য দিয়ে এই মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশের অনুমতি দেয়। কিন্তু একাধিকবার চেষ্টা করলেও মহিলারা মন্দির কর্তৃপক্ষের কারণে ভিতরে প্রবেশ করতে পারেনি।
আজ, শনিবার বিকাল থেকে খুলে যাচ্ছে শবরীমালার ঐতিহ্যমন্ডিত মন্দিরটি। শীর্ষ আদালতের আগের রায় অনুযায়ী আয়াপ্পার বার্ষিক মণ্ডলা পুজো উপলক্ষে এবারে প্রবেশ করতে পারবেন মহিলারা। কিন্তু মহিলাদের জন্য আলাদা ভাবে থাকছে না কোনো নিরাপত্তার ব্যবস্থা।তাছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে কোনো মহিলা আন্দোলনকারী বা রাজনৈতিক নেত্রী শবরীমালায় যেতে ইচ্ছুক হলেও আলাদা ভাবে কোনোরকম পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হবে না তাদের।
পুণের মহিলা অধিকার রক্ষা কর্মী ত্রুপ্তি দেশাই যিনি গত বছরও শবরীমালা মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশ নিয়ে শতাব্দী প্রাচীন নিষেধাজ্ঞাকে অমান্য করে সেখানে প্রবেশের চেষ্টা করেছিলেন তিনি বলেন, “আমি ২০ নভেম্বর শবরীমালা মন্দির দর্শনে যাব। সরকারি নিরাপত্তা ছাড়াই আমি মন্দির দর্শন করব।”
সুপ্রীম কোর্ট থেকে যে রায় দেওয়া হয়েছিল তা পুনর্বিবেচনা করার জন্য ৭ বিচারপতির বেঞ্চে পাঠানো হয়েছে। ৪০ দিনের এই বার্ষিক তীর্থযাত্রা নিয়ে সতর্কে রয়েছে কেরল সরকার। আপাতত দশ হাজারের বেশি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং মন্দির চত্বরে করা নিরাপত্তা জারি করেছে কেরল সরকার।