শ্রেয়া চ্যাটার্জি – টগবগিয়ে ঘোড়ার গাড়ি ছুটে চলেছে কলকাতার রাস্তা দিয়ে। সোনালী,রুপোলি গাড়ির মধ্যে রয়েছে পর্যটকরা। শীতকালে এমন ছবিটা খুবই চেনা কলকাতা শহরের বুকে। টগবগ করে ছুটে চলা সেই প্রাণবন্ত প্রাণীগুলো আজ না খেতে পেয়ে ঝিমিয়ে পড়েছে। লকডাউনের জন্য আসছে না তাদের খড়,বিচালি। আশেপাশের মাঠ গুলিতেও তাদেরকে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে পর্যটকশূন্য হওয়ায় ঘোড়াগুলির মালিকদেরও পকেট শূন্য। তাদের দিন কাটছে অতি কষ্টে। সব মিলিয়ে ১৫০ এর কাছাকাছি ঘোড়া অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।
লকডাউনের প্রভাবে সর্বস্তরের মানুষ এমনকি প্রাণীদের অবস্থাও এমন ভাবেই খারাপ হচ্ছে। কিন্তু অবলা প্রাণী গুলো কি দোষ করেছে! সেই অর্থে বলতে গেলে আমরাই বা কি দোষ করেছি যে আমাদের প্রতিদিন এমনকরে দিন যাপন করতে হচ্ছে। মারন করোনা ভাইরাস আমাদের প্রতি মুহূর্তে শেখাচ্ছে পৃথিবীতে ধনী-দরিদ্র, উচ্চ-নীচ, জাতি ধর্ম ও সবকিছু তুচ্ছ। সকলের ওপরে রয়েছে মৃত্যুভয়।
এই ভাইরাসটি অবলা জীব জন্তুর খাবারেও থাবা বসিয়েছে। তবে তাদের এমন দৈন্যদশা দেখে কলকাতা পুলিশ এগিয়ে এসেছেন তাদেরকে খড়, বিচালি দেওয়া হচ্ছে। করোনা ভাইরাস এর একমাত্র ওষুধ হলো সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, তাই সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে লকডাউনের। লকডাউন আমাদের মেনে নিতেই হবে। না হলে আমাদের এই ভাইরাসের মারণ থাবা থেকে কেউ বাঁচাতে পারবে না। তাই কষ্ট হলেও যেমন করে হোক লকডাউন মেনে নিন এবং তার সাথে সাথে এই পশুগুলির বেঁচে থাকার ব্যবস্থা করা ভীষণ দরকার। কারণ করোনাভাইরাস একদিন ভারতবর্ষ থেকে সর্বোপরি গোটা বিশ্ব থেকে বিদায় নেবে, তখন আবার মানুষ তার স্বাভাবিক জীবনের ছন্দে ফিরে আসবে এবং কলকাতার রাস্তার গৌরব এই ঘোড়াগুলি আবার টগবগিয়ে ছুটে চলবে প্রিয় শহরের বুকে।