নিউজ

নদীয়ার অভুক্ত শ্রমিকদের খাওয়ালেন মাংস-ভাত, বেজায় খুশি শ্রমিকরা

Advertisement

শ্রেয়া চ্যাটার্জি – লকডাউনের জন্য অনেক জায়গাতেই শ্রমিকরা আটকে পড়েছেন। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে তাদেরকে খাবার পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে অনেক জায়গাতেই। তবে সেই খাবারের তালিকায় হয়তো মাংস, ভাত থাকছে না। এবারের সেইরকমই ১০ জন শ্রমিকের পাতে পড়ল মাংস, ভাত। এমন উদ্যোগ নিয়েছিলেন উত্তর দিনাজপুর জেলার করণদিঘি ব্লকের রানীগঞ্জের বাসিন্দা শংকর পাঠক। নদীয়ার ১০ জন শ্রমিককে মাংস, ভাত খাওয়ালেন ইনি।

এই সমস্ত শ্রমিকরা কোচবিহার থেকে এসেছিলেন নদীয়ার ফুলিয়া এবং বর্ধমানের ধাত্রীগ্রামে তাঁতের কাজ করতে। ভারতে করোনা ভাইরাস থাবা বসানোয়, হঠাৎ করে লকডাউন ঘোষণা করলে, এই সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকরা অত্যন্ত বিপদের মুখে পড়েন। তাদের জীবিকাও বন্ধ হতে চলেছে। তাই পকেট কার্যত শূন্য। তাদের দায়িত্ব কোনো তাঁত শিল্পের মালিক পক্ষই নিতে চাইছেন না। এমত পরিস্থিতিতে তাদের অবস্থা খুবই শোচনীয় পর্যায়ে যায়। অন্যদিকেযে বাড়ি ফিরে যাবেন, তারও কোনো ব্যবস্থা নেই, কারণ যানবাহন বন্ধ। অনেকেই অবস্থার চাপে সাইকেল চালিয়ে কোচবিহারের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন সোমবার করণদিঘি থানায় পৌঁছলে সেখানেই শঙ্করবাবু তাদেরকে কাছেপিঠেই একটি হোটেলে নিয়ে গিয়ে পেট পুরে মাংস, ভাত খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেন। নদীয়া থেকে বেরোনোর সময় হাতে নিয়েছিলেন কয়েকটা চিঁড়ে, মুড়ির প্যাকেট। অনেকদিন ভালো করে খাবার পেটে জোটেনি, তারপরে তারা মাংস, ভাত খেতে পেয়ে বেজায় খুশি হয়েছেন।

করোনা ভাইরাস হওয়াতে অনেকগুলি মানবিক চিত্র উঠে আসছে আমাদের সকলের সামনে। পৃথিবীতে এখনও অনেক ভালো মানুষ আছে, যার জন্য পৃথিবীটা এখনো ধ্বংস হয়ে যায়নি। কখনো মসজিদ থেকে দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে খাওয়ানোর জন্য, কখনো আবার গুরুদ্বার খুলে দেওয়া হয়েছে সাধারণ মানুষের জন্য, কোথাও আবার মন্দিরের প্রণামী বাক্স খুলে দান করা হচ্ছে গরীব মানুষের উদ্দেশ্যে। সর্বধর্ম সমন্বয় ঘটেছে। যা সত্যিই প্রশংসনীয়। এখন মানুষের কাছে ধর্ম বড় না, কিংবা কে ছোট কে বড় তা বড় হয়ে উঠছেনা, মনুষ্যত্ব সবার আগে, তা প্রমাণিত।

Related Articles

Back to top button