বর্তমানে ভারতে সর্বোচ্চ মূল্যমানের নোট হলো ৫০০ টাকার নোট। অতীতে ১০০০ ও ২০০০ টাকার নোট চালু থাকলেও সেগুলো ধীরে ধীরে বাতিল করা হয়েছে। এবার সরকারের পক্ষ থেকে ৫০০ টাকার নোট নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে, যা প্রতিটি নাগরিকের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
জাল ৫০০ টাকার নোটের সংখ্যা বেড়ে চলেছে
সাম্প্রতিক এক রিপোর্টে দেখা গেছে, বাজারে জাল ৫০০ টাকার নোটের পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। অর্থমন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, গত পাঁচ বছরে এই নোটের জালিয়াতির হার ৩১৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সব খবর মোবাইলে পেতে 👉🏻
Join Now২০১৮-১৯ অর্থবছরে জাল ৫০০ টাকার নোটের সংখ্যা ছিল ২১,৮৬৫ মিলিয়ন পিস।
২০২২-২৩ অর্থবছরে এটি বেড়ে দাঁড়ায় ৯১,১১০ মিলিয়ন পিস।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে কিছুটা হ্রাস পেয়ে সংখ্যা নেমে আসে ৮৫,৭১১ মিলিয়ন পিসে।
কিভাবে চিনবেন আসল ৫০০ টাকার নোট?
জাল নোট শনাক্ত করতে RBI কিছু নির্দেশিকা দিয়েছে। আসল ৫০০ টাকার নোটে নিচের বৈশিষ্ট্যগুলি অবশ্যই থাকবে:
1. আকার: আসল নোটের মাপ ৬৬ মিমি x ১৫০ মিমি।
2. দেবনাগরী হরফে লেখা ৫০০: নোটের উপর দেবনাগরী হরফে ৫০০ লেখা থাকবে।
3. মহাত্মা গান্ধীর প্রতিকৃতি: নোটের মাঝখানে মহাত্মা গান্ধীর প্রতিকৃতি স্পষ্ট দেখা যাবে।
4. মাইক্রো টেক্সট: নোটে ‘ভারত’ এবং ‘RBI’ মাইক্রো অক্ষরে লেখা থাকবে।
5. রং পরিবর্তনকারী সুতোর বৈশিষ্ট্য: নোট বাঁকালে সুতোর রং সবুজ থেকে নীল হয়ে যাবে।
6. ইলেক্ট্রোটাইপ ওয়াটার মার্ক: নোটে মহাত্মা গান্ধীর প্রতিকৃতি ও ৫০০ সংখ্যা ইলেক্ট্রোটাইপ ওয়াটার মার্কে থাকবে।
7. আরোহী ফন্টে সংখ্যা: নোটের উপরের বাঁদিকে এবং নিচের ডানদিকে আরোহী ফন্টে সংখ্যা লেখা থাকবে।
8. ছাপানোর বছর: নোটের বাম দিকে ছাপানোর সাল উল্লেখ থাকবে।
9. অশোকস্তম্ভের প্রতীক: ডান দিকে থাকবে অশোকস্তম্ভের প্রতীক।
পরামর্শ: যে কোনও নোট গ্রহণের আগে এই বৈশিষ্ট্যগুলি যাচাই করুন। এতে সহজেই বুঝতে পারবেন নোটটি আসল না জাল।
জাল নোট শনাক্ত করা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
সম্প্রতি বিভিন্ন স্থানে ৫০০ টাকার জাল নোটের কারবার ধরা পড়ছে। অন্ধ্রপ্রদেশের কাদিরিতে এমন একটি ঘটনার পর বহু মানুষ প্রতারিত হয়েছেন। তাই সরকার সতর্ক করেছে যে, নোট গ্রহণের আগে অবশ্যই তা পরীক্ষা করতে হবে।
পুরনো বা বিকৃত নোট কীভাবে বদলাবেন?
ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের নিয়ম অনুসারে, আপনার কাছে যদি কোনও পুরনো, ছেঁড়া বা বিকৃত ৫০০ টাকার নোট থাকে, তাহলে তা ব্যাংকে জমা দিয়ে নতুন নোটের বিনিময়ে বদলানো যাবে। যদি কোনও ব্যাংক নোট বদলাতে অস্বীকার করে, তবে RBI-এর পোর্টালে অভিযোগ জানাতে পারেন।
সতর্কবার্তা ও দায়িত্ব
ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক এবং সরকারের পক্ষ থেকে নাগরিকদের সতর্ক করা হচ্ছে যে, কারেন্সি নোট ব্যবহারে অসাবধানতার কারণে বড়সড় প্রতারণার শিকার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তাই প্রতিটি নোট গ্রহণের সময় সতর্ক হয়ে যাচাই করুন এবং জাল নোটের প্রতারণা থেকে রক্ষা পান।
সচেতনতা ও সজাগ থাকাই জাল নোট চেনার মূল চাবিকাঠি। প্রতিটি নাগরিকের উচিত এই বিষয়ে সজাগ থেকে জালিয়াতি প্রতিরোধ করা।
