আসন্ন বাংলা বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি ভোট জয়ের উদ্দেশ্যে বাংলা জনগণকে বিভিন্ন রকম সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার অঙ্গীকার করছে। রাজ্যে তাপমাত্রার পারদ যেমন লাফিয়ে নামছে ঠিক অন্যদিকে রাজনীতি দ্বন্দ্বের পারদ পাল্লা দিয়ে চড়ছে। কোন রাজনৈতিক দল অন্যদলকে নির্বাচন ক্ষেত্রে এক ইঞ্চি জমি ছেড়ে দিতে চায় না। রাজ্যে তৃণমূল-বিজেপি দ্বন্দ্ব এখন চরমে। রাজ্যের গেরুয়া শিবির বাংলার জনগনকে সন্তুষ্ট করার সবরকম চেষ্টা করছে।
চলতি বছরের প্রথম অধ্যায়ে বিজেপির এনআরসি ও সিএএ আইন নিয়ে কার্যত চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল। এরপর নির্বাচনের আগে বিজেপির বাংলা পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় জানিয়ে দিলেন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ পশ্চিমবঙ্গে এখন কার্যকর হলেও এনআরসি চালু করার কোনো পরিকল্পনা নেই কেন্দ্রের। গত শনিবার ঠাকুরনগর শান্তনু ঠাকুর এর সাথে বৈঠক করতে গিয়ে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। এছাড়াও তিনি এদিন জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবারের বাংলা সফরে এসে কোন জনসভা করবেন না। তার এবারের বাংলা সফল শুধুমাত্র দলীয় কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে।
গত শনিবার বিজেপি বাংলা পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের সাথে ঠাকুরনগরে দেখা করতে গিয়েছিলেন। সেখানেই তিনি জানান, _জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুর দিকে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন লাগু হবে। আর তখনই নাগরিকত্ব অধিকার পাবে মতুয়ারা। সেই কাজ কি করে হবে তানিয়া এখন আলোচনা করছে কেন্দ্র সরকার।” সেই সাথে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, “এখনই কেন্দ্র সরকারের এনআরসি চালু করার কোন পরিকল্পনা নেই।” আসলে কেন্দ্র সরকার অসমের মত ভুল আর করতে চায় না।
অন্যদিকে কৈলাসের মন্তব্যের পাল্টে দিতে ভোলেনি বাংলা শাসকদল তৃণমূল শিবির। তৃণমূল জানিয়েছে, মতুয়ারা তো ইতিমধ্যেই এ দেশের নাগরিক। তাহলে তাদের আবার নতুন করে নাগরিকত্ব দেয়ার প্রশ্ন উঠছে কেন? রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, কেন্দ্র বাংলা বিধানসভা নির্বাচনের আগে আর ঝুঁকি নিতে চায় না। অসমে এনআরসি চালু করার পর চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল। এমনকি বিজেপির অন্দরে এই নিয়ে গোল বেঁধেছিলো। তাই বাংলায় কোন ভাবেই সেই ঝুঁকি নিতে চায় না গেরুয়া শিবির। তাছাড়া এখন নির্বাচনের আগে এনআরসির নাম না তুলতে চাইলে বাংলায় মুসলিম সংখ্যালঘু ভোটের কিছুটা অংশ হলো গেরুয়া শিবির পাবে। তাই নির্বাচনের আগে এনআরসি নিয়ে কার্যত উল্টো সুর গাইছে গেরুয়া শিবির।