দীর্ঘ ৩৪ বছরের শাসনের অবসান ঘটিয়ে বাংলায় তৃণমূলের পতাকা উত্তোলন করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১১ সালে। তখনো তার হাতে প্রধান অস্ত্র ছিল সিঙ্গুরের কৃষি আন্দোলন। আবারো ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের জয়রথ চালিয়ে যেতে সিঙ্গুরকে কাজে লাগাতে চায় তৃণমূল সুপ্রিমো। একের পর এক সিঙ্গুরে শিল্পের দাবি নিয়ে গেরুয়া শিবির বা সিপিএম শাসকদলকে আঘাত হেনেছে। কিন্তু এমন সময় বিরোধীদের মুখ বন্ধ করে আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিঙ্গুরে একটি অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ঘোষণা করলেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই আজ বলেছেন, “সিঙ্গুরে অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক তৈরি করতে চাই। সিঙ্গুরের ফসল সুজলা ও সুফলা। আর কৃষি আমাদের গৌরব এবং শিল্প আমাদের সম্পদ।” এছাড়াও তিনি আজকে জানিয়েছেন, “মোট ১১ একর জমি ঘিরে পার্ক তৈরি করছে পশ্চিমবঙ্গ ক্ষুদ্রশিল্প উন্নয়ন নিগম। সেখানে ইচ্ছুক শিল্পপতিদের ১০ থেকে ৩০ কাটার প্লট দেওয়া হবে। এছাড়াও এর থেকেও বড় প্লট দেয়ার পরিকল্পনা করে রাখা হয়েছে।”
এছাড়াও তিনি আজকে পুরনো কথা মনে করিয়ে বলেছেন তৃণমূল সরকার সর্বদা সিঙ্গুরের কৃষকদের পাশে আছে। তাই তিনি বলেন, “আগেও সিঙ্গুরের জমি ফেরত দিয়েছি। চাষীদের সম্ভবত দুই আড়াই হাজার টাকা প্রতি মাসে আমরা দি। সেই সাথে বিনা পয়সায় রেশনের চাল দিচ্ছি।” এছাড়াও তিনি জানিয়েছেন, “অদূর ভবিষ্যতে বাংলায় বড় বড় কোম্পানি বিনিয়োগ করবে। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ফোর্ডকে বলেছিলাম নবদ্বীপে কারখানা করতে। কিন্তু করণা প্যানডেমিক এর জন্য কাজটা আটকে আছে। তবে খুব তাড়াতাড়ি তা হবে।”
বঙ্গ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেছে মমতা বন্দোপাধ্যায় ফের সিঙ্গুরকে হাতিয়ার করে আসন্ন বাংলা বিধানসভা নির্বাচনে জিততে চায়। ভোটের জন্য একদিকে যেমন বিজেপি বাংলায় শিল্প আনার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে ঠিক তেমনভাবেই মাস্টারস্ট্রোক খেলল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি কৃষিনির্ভর শিল্প আনার কথা ভেবে একদিকে যেমন কৃষকদের সাহায্য করল ঠিক অন্যদিকে আবার রাজ্যে শিল্প ও আনলো। তাইতো তিনি বলেছেন, “কৃষি আমাদের গৌরব, শিল্প সম্পদ।”