শ্রেয়া চ্যাটার্জি : মুম্বাই এর থানেতে তৈরী করা হয়েছে রুটি ঘর। যেখানে প্রতিদিন ১০০ জন ক্ষুধার্ত মানুষকে খাওয়ানো হয়। এই কাজটি করেন চিনু কাতরা নামে ২৭ বছরের এক যুবক। ছোটবেলা থেকেই চূড়ান্ত অর্থনৈতিক দুরবস্থার সঙ্গে কাটাতে গিয়ে তিনি মা কে রান্নার কাজে সাহায্য করতেন ছোটবেলা থেকে এইসব কাজ করে সে পড়াশোনা করেছে। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছে। উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পরে সে এমবিএ পড়াশুনা করে। এমবিএ পাশ করার পরে চিনু মার্কেটিংকে জীবিকা হিসেবে নেয়। তখন তার মাথায় ছিল তার খুড়তুতো ভাই-বোনেরা একটি স্কুল খুলেছে থানেতে। সেখানে বাচ্চাদের কে পড়াশোনা করানো হয়।
২০১৪ সালে চিনু একটি মেয়েকে ভালবাসত এবং সে একটি দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করে। তারপর এই চিনু আস্তে আস্তে ডিপ্রেশনে চলে যায় এবং আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিল। এই ভেঙ্গে যাওয়া মুহূর্ত টাই চিনুর জীবনে একটা ঘুরে দাড়ানোর মুহূর্ত তৈরি করে। চিনু চাকরি ছেড়ে দেয় এবং সে ২০১৭ সালে সিদ্ধান্ত নেয়, সে সামাজিকভাবে কাজকর্ম করবে।
আরও পড়ুন : শীতের মরশুমে ভারতের এই চারটি জায়গা ঘুরে আসুন
বর্তমানে চিনুর এনজিও ৭০০ অনুন্নত বাচ্চার পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছেন। এসবের পাশাপাশি গ্রামের মেয়েদের ঋতুস্রাব এর পরিছন্নতা নিয়ে, স্যানিটারি ন্যাপকিন সম্পর্কেও তারা এখানকার মেয়েদের ওয়াকিবহাল করে থাকেন। বিকাল ৫.৩০ বাজলেই তারা স্টিলের থালা, বাটি নিয়ে দাঁড়িয়ে পরে লাইনে। সুস্বাদু এবং সুষম আহার তাদেরকে দেওয়া হয়। প্লেটের মধ্যে সাজানো থাকে ভাত, ডাল। আর কখনো কখনো আবার সেখানে দেখা যায় এক টুকরো চকলেট এবং কেক অথবা গোলাপ জামুন।
আমাদের সমাজে এমন মানুষ খুবই দরকার। তবে সমাজটা আরো উন্নত হবে। শুধুমাত্র নিজেকে শিক্ষিত করা নয়, নিজের সাথে সাথে আরও পাঁচটা বাচ্চাকে শিক্ষিত করতে পারলে সমাজের দুরবস্থা দূর হবে। চিনুর মতন মানুষের আমাদের সমাজে খুব প্রয়োজন। যারা সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কান্ডারী।
খাবারগুলোতে নিজস্ব এনজিওতেই বানানো হয়। তারই ‘রুটি ঘরের’ মাধ্যমে শুধুমাত্র বাচ্চাদের খাওয়ানো হয় না, এর মাধ্যমে বাচ্চাদের কে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় শেখানো হয়। খাবারের থালা হিসাবে কখনোই থারমো কল বা প্লাস্টিকের থালা ব্যবহার করা হয় না সবসময় স্টিলের থালায় খাবার দেওয়া হয় একটা একটা পরিচ্ছন্নতার অশিক্ষা তিনি সকলকে দিয়ে আসছেন।