শ্রেয়া চ্যাটার্জি – ১৯৯৬ সালে রাঘব নারকেল চাষ করা শিখেছিলেন তার পিতামহর কাছ থেকে। তবে গত সাত জন্ম ধরে তারা প্রত্যেকেই চাষাবাদের সঙ্গে যুক্ত। রাঘব তখনও গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেননি। মাটির সঙ্গে তার কোনো সম্পর্কই নেই। আঞ্চলিক এবং দেশ-বিদেশের নানান মানুষ জাতিকে তিনি শুনেছিলেন, শরীর ভালো রাখতে প্রয়োজন হেলদি ডায়েট। আর সেই থেকেই মাথায় এমন ধারণা চলে আসে। তাই MBA পাশ করার পরে চাষাবাদ কে তিনি বিকল্প পথ না ভেবে এটি করা তার দায়িত্ব বলে মনে করেছেন। এই কাজটি করার জন্য কোন রকমই চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয় না বিশেষত, ব্যবসায় যেমনটা হয়। প্রতিদিনের চাষাবাদ করার মধ্যে দিয়ে শেখা যায়।
‘ন্যাচারাল ফার্মিং’ – এর প্রিন্সিপাল মাসানবু ফুকুওকার প্রভাবে তিনি চাষ করা শুরু করেন। তার এই সুন্দর ফসলের বাগান ‘আইকানথিকা’ যা ২১ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। এখানে নানা জাতির পশু, পাখি, পতঙ্গ, মাইক্রোঅরগানিজম, ফল, ফসল, ঔষধি গাছপালা রয়েছে। তার বাড়িতে রয়েছেন তার মা-বাবা, তার স্ত্রী, এবং তার ছেলে, মেয়ে। চাষাবাদের পাশাপাশি এখানে শেখানো হয়, কিভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে বেঁচে থাকা যায় প্রাকৃতিক উপায় মাটি, বাঁশ, পাথর, কাঠ ইত্যাদি দিয়ে বাড়ি বানানো যায়, প্রাকৃতিক উপায়ে কিভাবে পোশাক তৈরি করা যায়। তিনি জানান, বাজার থেকে কেনা আম ও অন্যান্য ফল খেয়ে ততটা মিষ্টত্ব পাওয়া যায় না, যা পাওয়া যায় নিজের তৈরি করা একেবারে প্রাকৃতিক উপায়ে জমির ফসল থেকে।
প্রকৃতির মধ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে নানা উপাদান, শুধু আমাদের বেঁচে থাকার তালিকার মধ্যে তাদেরকে একটু যোগ করে নিতে হবে। তাহলেই কংক্রিটের জঙ্গল থেকে আমরা একটু মুক্তির স্বাদ পেতে পারি। এই মানুষগুলোইতো আমাদের কাছে একমাত্র আদর্শ হতে পারে। সাধারণ জীবন যাপন করতে হবে, টাটকা ফল সবজি খেতে হবে, সাধারণ প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে বাড়ি ঘর বানাতে হবে। তবেই পরিবেশের দূষণ কমবে, সাথে সাথে আমরা নিজেরাও সুস্থ থাকব।