ভারতের প্রাক্তন অনূর্ধ্ব-১৯ দলের প্রধান কোচ রাহুল দ্রাবিড় জুনিয়র ক্রিকেটের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন যে, “সব জুনিয়র ক্রিকেটার জাতীয় দলের হয়ে খেলতে যাবেন না এবং অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলাটাই সবকিছু নয়।” জুনিয়র টুর্নামেন্টের ইতিহাসে ভারত সবচেয়ে সফল দল হতে পারে তবে এমনকি যারা সেই স্তরে ভাল করছে তারাও মাঝে মাঝে সিনিয়র স্তরের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে ব্যর্থ হয়।
অনূর্ধ্ব-১৯ ভুলে যান, ভারত-এ দলের হয়ে খেলা এমন অনেক খেলোয়াড় আছেন যারা এখনো জাতীয় দলে সুযোগ পাননি। তবে হ্যাঁ, অনূর্ধ্ব -১৯ স্তরের সাফল্য একজন খেলোয়াড়কে অল্প বয়সে লাইমলাইট অর্জন করতে সহায়তা করতে পারে তবে বিশ্বকাপের দলের অংশ হওয়া সব কিছু নয়। এমন অনেক ক্রিকেটার আছেন যারা অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলেননি তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বেশ ভাল পারফর্ম করছেন। সেরকম তিনজন ক্রিকেটারের কথা আমরা এই প্রতিবেদনে আলোচনা করব।
আরও পড়ুন : সিরিজে খারাপ প্রদর্শন, শীর্ষস্থান খোয়ালেন বুমরাহ
মহেন্দ্র সিংহ ধোনি : ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক কখনোই ভারতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ দলে জায়গা করতে পারেননি। জুনিয়র বিশ্বকাপ ২০০০ এর ঠিক আগে কোচবিহার ট্রফির ফাইনালে এক নজরকাড়া পারফরম্যান্স ধোনিকে দলে দলে জায়গা তৈরি করে দিতে পারত, তবে তিনি কেবল ৮৪ রান করেছিলেন তাই তা আর হয়নি। যুবরাজ সিং এবং মহম্মদ কাইফ যারা বিশ্বকাপজয়ী স্কোয়াডের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, তাদের শিগগিরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পদার্পণ করতে দেখা গিয়েছিল। ধোনির গায়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ের ট্যাগ নেই এবং ভারতীয় দলে ডাক পাওয়ার আগে তিনি রঞ্জি ট্রফিতে বিহারের হয়ে খেলেন। তিনি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের বাস মিস করার চার বছর পর জাতীয় দলের ডাক পেয়েছিলেন এবং তারপর জাতীয় দলের অন্যতম সদস্য হয়ে উঠেন।
রবিচন্দ্রন আশ্বিন : অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ না খেললেও অশ্বিন ভারতের অনূর্ধ্ব-১৭ দলের সদস্য ছিলেন। জুনিয়র স্তরে অশ্বিন তামিলনাড়ুর এবং অনূর্ধ্ব-১৭ দলের হয়ে ওপেনিং ব্যাটসম্যান ছিলেন এবং একই সঙ্গে তিনি পার্ট টাইম অফ স্পিনারও ছিলেন। আশ্বিন সম্ভবত খেলার এক দিক নিয়ে পুরোপুরি ফোকাস করতে না পারায় দল থেকে বাদ পড়েছিলেন। ২০০৬ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ না খেললেও ৬ বছর বাদে জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপ জেতেন।
হার্দিক পান্ড্য : সাদা বলের ক্রিকেটে এক অনিবার্য ব্যক্তি হার্দিক পান্ড্য জাতীয় দলের হয়ে খেলার আগে কোনও অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলেননি এবং ঘরোয়া ক্রিকেটেও তিনি অভিজ্ঞ ছিলেন না। জাতীয় দলে দ্রুত সুযোগ পাওয়ার আগে তার দরকার ছিল কেবলমাত্র একটি ভাল আইপিএল মরসুম। এমন নয় যে তিনি জুনিয়র ক্রিকেট খেলেন না। পান্ড্য তার রাজ্য বরোদার হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেন। একবার অনূর্ধ্ব-১৬ পর্যায়ে ২২৮ রানের ইনিংস খেললেও তিনি ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ এর হয়ে খেলেননি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যেই পান্ড্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০১৬ খেলেছিলেন। সম্প্রতি তিনি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চার বছর পূর্ণ করেছেন এবং ইতিমধ্যেই তিনটি আইসিসি টুর্নামেন্ট খেলে ফেলেছেন।