বেশ কয়েকদিন ধরে বাবুল ইস্যু নিয়ে বিতর্ক চলছিল রাজনৈতিক মহলে। মন্ত্রিত্ব হারানোর পর থেকেই বারংবার বিজেপির বিরুদ্ধে মন্তব্য করে আসছিলেন এই বিজেপি সাংসদ। আর আজকে হল সবকিছুর পরিসমাপ্তি। বিজেপি পরিত্যাগ করলেন বাবুল সুপ্রিয়। উপসংহার হিসেবে রাখলেন তার একটি ফেসবুক পোস্ট। এই ফেসবুক পোস্টের ছত্রে ছত্রে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের বিরোধিতা, নিজের মন্ত্রিত্ব হারানোর জন্য ক্ষোভ প্রকাশ, এবং সর্বোপরি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে নাম না করে করা বেশ কিছু মন্তব্য।
এই ঘটনা সামনে আসার পরেই যারপরনাই বিরক্ত দিলীপ ঘোষ। যদিও তিনি জানিয়েছেন, এখনো পর্যন্ত বিজেপি সদরদপ্তরে বাবুল সুপ্রিয়র কোন ইস্তফাপত্র আসেনি, তাই তিনি এখনো পর্যন্ত বিজেপির সহকর্মী রয়েছেন। কিন্তু দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বাবুল সুপ্রিয়র সম্পর্ক যে বহুদিন যাবত বেশ কিছুটা সমস্যার মধ্যে চলছে, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বারংবার দেখা গিয়েছে, তাদের দুজনের মধ্যে কিছু না কিছু সমস্যা চলছে। তার মধ্যেই আবার বিধানসভা নির্বাচনে বাবুলের হার, সঙ্গেই মন্ত্রী পদ থেকে বরখাস্ত, সবকিছু নিয়েই অত্যন্ত চাপে ছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। তাই আজকেই সেই সমস্ত চাপমুক্ত করলেন।
কিন্তু বাবুল সুপ্রিয়র এই ইস্তফাপত্র নিয়ে কি বলছে তৃণমূল কংগ্রেস? সৌগত রায়, কুনাল ঘোষের মতো নেতাদের বক্তব্য কী? বাবুলের পদত্যাগ নিয়ে বিজেপিকে বিধতে ছাড়েনি তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক কুনাল ঘোষ এই ঘটনাটা কে পুরোপুরি নাটক হিসেবে উত্থাপন করেছেন এবং পাশাপাশি ভিক্টোরিয়ার ঝাল মুড়ির কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। কুনাল এর বক্তব্য, “আমি এটাকে কোনভাবেই গুরুত্ব দিতে রাজি নই। বাবুল শুধুমাত্র হঠকারিতার বশে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করে ফেলেছে। ওকে ঘুম থেকে তুলে আদেশ দেওয়া হয়েছে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দাও, তাই দুঃখ হয়েছে। দলে কোণঠাসা অবস্থায় রয়েছে, বিধানসভা নির্বাচনে হার, অক্সিজেন পাচ্ছে না বহুদিন ধরে। তাই এখন ছেড়ে দেওয়ার কথা বলছে। যদি ছাড়তেই হতো তাহলে স্পিকারের কাছে গিয়ে ইস্তফা পত্র জমা দিল না কেন? এটাতো নাটক করছে। ওর মনে রাখা উচিত, ভিক্টোরিয়ার ঝালমুড়ি অনেক বেশি আন্তরিক, সুস্বাদু।”
অন্যদিকে আবার, তৃণমূলের বর্ষিয়ান নেতা সৌগত রায় বলেছেন, “বাবুন এটা দুঃখের বশে করে ফেলেছে। গত পরশুদিন আমার সেন্ট্রাল হলে ওর সাথে দেখা হয়েছিল। ওকে দুঃখিত মনে হচ্ছিল। বাবুল সুপ্রিয় তো আর রাজনীতির লোক নয়, তাই বিধানসভায় পরাজয় নিয়ে ও অত্যন্ত আহত হয়েছে। আমি বলব আগামী ২০২৪ পর্যন্ত সাংসদ থাকুক। এটা ওর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত রাজনীতিতে থাকবে কিনা। কিন্তু আমি চাই যেন, সাংসদের এই মেয়াদ শেষ করুক, রাজনীতি ছাড়বেন না, তাহলে জনগণের প্রতি সুবিচার করা হবে না।”