একুশে নির্বাচনের আগে তৃণমূল বিজেপি দ্বন্দ্ব অব্যাহত রয়েছে। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন নেতার কর্মকাণ্ডে সরগরম হয়ে আছে বঙ্গ রাজনীতি। তারমধ্যে তৃণমূল নেতাদের দলবদল শাসক শিবিরের গলায় কাঁটা হয়ে আটকে আছে। এরই মাঝে জল্পনা বাড়িয়ে পূর্ব বর্ধমানের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ (Swapan Debnath) অঞ্চলে রাম মন্দির প্রতিষ্ঠা করলেন। জানা গিয়েছে, ওই তৃণমূল মন্ত্রী খোল কর্তাল বাজিয়ে পুরোহিতের মন্ত্রীর সাথে নারকেল ফাটিয়ে বেশ জাঁকজমক করে রাম মন্দির এর সূচনা করেন। যদিওবা রাম মন্দির কোন রাজনৈতিক প্রতীক না, তাও রাজ্যে যেমনভাবে জয় শ্রীরাম স্লোগানকে গেরুয়া শিবির তাদের প্রচারের কাজে লাগাচ্ছে, তাতে রাম মন্দির প্রতিষ্ঠা এখন গেরুয়া শিবিরের প্রতিনিধিত্ব করার সমান হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পূর্ব বর্ধমান জেলার তৃণমূল নেতা স্বপন দেবনাথ এর রাম মন্দির প্রতিষ্ঠা করাকে যথেষ্ট রাজনৈতিক ভাবে অর্থবহ বলে মনে করেছে বঙ্গ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। শাসকদল শিবিরের নেতারা এহেন কাজে শাসক শিবির যে যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়েছে তা বলাই বাহুল্য। তবে উদ্বোধন করার আগে স্বপন দেবনাথ বলেছেন, এলাকায় আগে রাম লক্ষণ সীতার মন্দির ছিল। ইতিহাসকে বাঁচিয়ে রাখতে এই রাম লক্ষণ সীতা রাম ভক্ত মহাবীরের মন্দির স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছি। এর সাথে রাজনৈতিক অবস্থানের কোনো সম্পর্ক নেই। অন্যদিকে তৃণমূল নেতার রাম মন্দির প্রতিষ্ঠাকে কটাক্ষ করতে ভুলে যায়নি বঙ্গ শিবির। গেরুয়া শিবিরের দাবি, শাসকদলের ভোটব্যাংকে ভাঙ্গন রুখতে রাম মন্দির তৈরি করছে তৃণমূল। সবই ভোটের চমক ছাড়া আর কিছুই না।
প্রসঙ্গত, পূর্ব বর্ধমান জেলা পূর্বস্থলী এক নম্বর ব্লকের জাহান্নগর পঞ্চায়েতের ভাতছালা গ্রামে প্রায় ১ বছর আগে এই মন্দিরের শিলান্যাস হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে স্বপন দেবনাথ বলেছেন, “এই গ্রাম অত্যন্ত প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী। এই গ্রামে আধুনিক যাত্রাপালা রূপকার মতিলাল রায় জন্মগ্রহণ করেছেন। এই গ্রামের প্রাচীন নিদর্শন বর্তমানে বিলুপ্ত। বর্গী আক্রমন এ পূর্বস্থলী থানা ও তৎসংলগ্ন এলাকার যেসব জনপদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তারমধ্যে এই গ্রাম অন্যতম। আগে তাদের এই গ্রামে রাম সীতার লক্ষনের মূর্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। কিন্তু সেই মন্দির বহু বছর আগেই বিলুপ্ত হয়েছে। ইতিহাস পুনরুদ্ধারের জন্য এই মন্দির প্রতিষ্ঠান আবারো করা হচ্ছে।”