এসএসসি দুর্নীতি কাণ্ডে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেপ্তার হওয়ার পরে প্রথম সাংবাদিক বৈঠক করলো পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। ইতিমধ্যেই এসএসসি মামলায় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা বর্তমান শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। ব্যাঙ্কশাল কোর্টে শুনানির পর তাকে দুদিনের হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে বিশেষ আদালত। সেই নিয়ে এই শনিবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করলো তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং তৃণমূল মুখপাত্র কুনাল ঘোষ। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে এই বৈঠক হয়েছিল।
এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে প্রথম থেকেই বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে ছিল শাসক দল। পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ মডেল অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া ২১ কোটি টাকার সঙ্গে যে তৃণমূল কংগ্রেসের কোন সম্পর্ক নেই সেটা প্রথম থেকেই পরিষ্কার করে দিয়েছিল শাসক দল। এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল মুখপাত্র কুনাল ঘোষ বললেন, যার বাড়ি থেকে টাকা উদ্ধার করা হয়েছে তার সঙ্গে তৃণমূলের কোনো সম্পর্ক নেই। এ ব্যাপারে দল কিছু জানেনা। এই টাকার উৎস কি? এর পিছনে কি রয়েছে? যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই তদন্ত শেষ করে আদালতের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার করা হোক, বলছেন কুনাল ঘোষ।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক এরকমটাও মত তৃণমূল মুখপাত্র কুনাল ঘোষের। পাশাপাশি, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ যদি প্রমাণিত হয় তাহলে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে বলেই আগাম জানিয়ে রাখছেন তৃণমূল মুখপাত্র। তবে এদিনকার বৈঠকে বিজেপির বিরুদ্ধে আওয়াজ চড়ালেন তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম। আজকে সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই আক্রমণ করে ফিরহাদ হাকিম বললেন, যদি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কোন ষড়যন্ত্র করা হয় তাহলে তৃণমূল কংগ্রেস তীব্র প্রতিবাদ করবে।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার বিরুদ্ধেও তীব্র শ্লেষ শোনা গেল ফিরহাদের গলায়। তিনি বললেন, ‘পার্থ দা ওয়াশিং মেশিনে ঢুকলে গ্রেফতার হতেন না। বিচার ব্যবস্থার উপরে এখনো পূর্ণ আস্থা রয়েছে। যদি দোষ প্রমাণিত হয় তাহলে চরম শাস্তি দেবে দল। তবে ষড়যন্ত্র হলে তা আমরা প্রতিবাদ করব। নৈতিকভাবে আমরা মাথা নত করব না। বিজেপির চাপের কাছে আমরা মাথা নত করি না। সারদা কর্তা লিখে দেওয়ার পরেও একজন খোলা বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তদন্তকারী সংস্থা তার বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ করছে না।’ এ দিনের বৈঠকে নাম না করে শুভেন্দু অধিকারী কে কটাক্ষ করেন ফিরহাদ। পাশাপাশি, বিজেপি ও ইডিকে একসূত্রে আক্রমণ করে তার বক্তব্য, এখন মনে হচ্ছে বিজেপি তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে নিজেই চালাচ্ছে। যে ঘটনা ঘটছে তাতেই প্রমাণ হচ্ছে, ইডিকে নিয়ন্ত্রণ করছে বিজেপি।