অফবিট

আজ জাতীয় সুরক্ষিত মাতৃত্ব দিবস, মায়েরা কি সত্যিই সুরক্ষিত?

Advertisement

শ্রেয়া চ্যাটার্জী – “এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার”, সন্তান জন্মানোর আগে প্রত্যেকটা মায়ের এই অঙ্গীকার মনে মনে থাকে। সেই মা রাজপ্রাসাদে থাকুক কিংবা ফুটপাতবাসী হন। নারী জীবনে পূর্ণতা পায় মাতৃত্বের মাধ্যমে। তবে নারীর জীবন কতটা সুরক্ষিত? মাতৃত্বকালীন অবস্থাতেও নারীরা অনেক সময় লাঞ্ছনা বঞ্চনার শিকার হন। আজ জাতীয় মাতৃত্ব সুরক্ষা দিবস। প্রত্যেকটি দেশ যতই উন্নতির দিকে এগিয়ে যাক মেয়েদের প্রতি অত্যাচার কিন্তু দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। খবর কাগজ, সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা সকলের সামনে চোখে পড়ে যা হল ধর্ষণ। যেখানে নারীরা সুরক্ষিত নয়? সেখানে অসহায় গর্ভবতী মায়েরা কি করে সুরক্ষিত থাকবেন?

ফুটপাতের মধ্যে অবহেলায় পড়ে থাকে গর্ভবতী নারী। তাদের নেই শরীরের যত্ন। তবে কি করে একটি মা সুস্থ সন্তানের জন্ম দেবেন! ফুটপাতে ফুটফুটে সন্তানের জন্ম দেন পাগলি মা। যে সন্তানের বাবার কোনো ঠিক নেই। অসহায় মা আগলে রাখে তার সদ্য হওয়া সন্তানকে। রাতের অন্ধকারে এই মানসিক ভারসাম্যহীন পথচারীনির উলঙ্গ শরীরকে ভোগ করে এ কোন মানুষের মুখোশ পরা অমানুষ? এ তো গেল ফুটপাতবাসী দের অবহেলার কথা। গর্ভবতী অবস্থায় অনেক নারীরাই অত্যাচারের শিকার হন অনেক শিক্ষিত সম্প্রদায়ের মধ্যে। সন্তান জন্মানোর পরেও অনেক মেয়েকে কন্যা সন্তানের মা হওয়ার জন্য অবহেলা সহ্য করতে হয়। যে সমাজ কন্যা চায় না, সেই সমাজ কি করে এগিয়ে যাবে? নারী শক্তি তো একটা সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। আজ তারাই অবহেলার শিকার।

সুরক্ষিত মাতৃত্ব কালীন জীবন পেতে প্রত্যেকটি মেয়েকে নিজেকেই এগিয়ে আসতে হবে। অবাঞ্ছিত সন্তান আর নয়। যে সন্তান আসছে সে যেন কোনোভাবেই অবহেলিত না হয় এই সমাজে। কামুক পুরুষের বিরুদ্ধে তাকে প্রতিবাদ করতে হবে। তবে কয়েকটা মুখোশধারী পুরুষের জন্য গোটা পুরুষ সমাজকে নিন্দা করার কোন প্রয়োজন নেই। নারীর পাশে পুরুষ কখনো ভালো বাবা, ভালো দাদা, আদরের ভাই, স্নেহের পুত্র হয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে বারবার। ঘরের কোণে বসে থেকে অত্যাচার সহ্য করার দিন শেষ। নারীকে মনে রাখতে হবে নিজে মানসিক এবং শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকলে, তবেই সে এক সুস্থ স্বাভাবিক সন্তানের জন্ম দিতে পারবে। তবে সবার আগে প্রয়োজন নারীকে শিক্ষিত করার। কারণ শিক্ষাই একমাত্র নারীর জীবনের হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে। এখনো দেশের অনেক জায়গা আছে যেখানে নারীদের অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। তার শরীরের পূর্ণতা আসার আগেই সে সন্তান জন্ম দিতে শুরু করে। পুরুষের কামনা-বাসনার শিকার হয়।

নিম্নবিত্ত সমাজ থেকে নারীর মধ্যে শিক্ষার বীজ বপন করতে হবে। শিক্ষিত সমাজের উচিত নিজেদের শিক্ষিত করার পাশাপাশি অন্তত একটি নিম্নবিত্ত পরিবার কে শিক্ষিত করার চেষ্টা করা। প্রত্যেকের একটু একটু চেষ্টাতেই নারী সমাজ উন্নতির পথে যাবে। তবেই নারী সুস্থ থাকবে এবং সর্বোপরি সেই নারী যখন মাতৃত্বের স্বাদ পাবে তখন মাতৃত্বকে তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করবে। একটি ফুটফুটে সন্তানের জন্ম দেবে।

Related Articles

Back to top button