শ্রেয়া চ্যাটার্জি – চৈত্র সংক্রান্তির চড়ক উৎসব এর আগের দিন এই নীল পূজা অনুষ্ঠিত হয়। মূলত আজকের দিনে শিব দুর্গার বিয়ে হয়েছিল। শিবের অপর নাম নীলকণ্ঠ। এই নীলকন্ঠ শিবের সঙ্গেই নীলাবতী পরমেশ্বরীর বিয়ে উপলক্ষে যে লৌকিক আচার অনুষ্ঠিত হয়েছিল তারই নাম নিয়ে পুজো। নীলের ব্রত নিষ্ঠা ভরে পালন করলে মেয়েদের আর কোন দুঃখ কষ্ট থাকে না। তাই হিন্দু রীতি মেনে হিন্দু নারীরা সন্তানের কল্যাণে পুজো করে থাকেন।
তবে এই নীল পুজোর সঙ্গে ‘ষষ্ঠী’ নামটি কেন জুড়ে দেওয়া হল? সন্তানের মঙ্গল কামনায় বা সন্তান লাভের জন্য মা ষষ্ঠীর পুজো করা হয়। তবে পয়লা বৈশাখের আগে যে ‘নীল ষষ্ঠী’ পালন করা হয়, তখন কিন্তু পঞ্জিকায় ষষ্ঠী তিথি থাকেনা। অশোক ষষ্ঠী, লোচন ষষ্ঠী, জামাইষষ্ঠীর মতন এটি কোন ষষ্ঠী নয়।
লোককথা থেকে জানা যায়, এই সময় ঋতু পরিবর্তন হয় তাই ভগবানের থানে গিয়ে সন্তানের মায়েরা তাদের সন্তান যেন সুস্থ থাকে এমন কথা জানান। তাই বোধহয় শিব, পার্বতীর বিয়ের দিন এর সঙ্গে ‘ষষ্ঠী’ কথাটা এমন ভাবে জুড়ে গেছে।
নীল ষষ্ঠী করার পদ্ধতি-
সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত উপবাস করা হয়।
দুধ, গঙ্গাজল, মধু, নারকেল জল ঢালা হয় শিবলিঙ্গে।
শিবের অন্য পূজার মতো এতেও থাকে আকন্দ ফুল ও বিল্ব পত্র।
আর এই পুজোর জন্য উৎসর্গীকৃত পাঁচটি ফলের মধ্যে একটি ফল কে বেল হতেই হবে।
প্রতিবার নীল পুজো পালন করা হয়। মন্দিরগুলিতে উপচে পড়া ভিড় হয়। তবে এবারে করোনা ভাইরাস এর আতঙ্কের জন্য গোটা ভারতবর্ষ জুড়ে লকডাউন চলছে। তাই বাড়ির শিবলিঙ্গের পুজো করুন। সুস্থ থাকুন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। অযথা ভিড় করবেন না।