নিউজরাজ্য

শেষ বেলায় গান স্যালুট ও চোখের জলে বিদায় নদীয়ার শহীদ জওয়ান সুবোধ ঘোষকে

Advertisement

নদিয়া: বেশ কয়েক বছর আগে উরিতে পাকিস্তানের হামলার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয়ে থাকে। শুক্রবার ফের রক্তাক্ত হয় সেই ঐতিহাসিক উরি। কাশ্নীরের উরি এবং গুরেজে পাকিস্তানি সেনার হামলায় শহিদ হয়েছেন ভারতীয় সেনার তিন জওয়ান৷ এর পাশাপাশি নিরীহ দুই গ্রামবাসীও নিহত হয়েছেন। এছাড়াও বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। এরই মধ্যে যে তিনজন নিহত হন, তার মধ্যে একজন নদিয়ার তেহট্টর এক বাঙালি জওয়ান রয়েছেন। দীপাবলির আগে ঘরের ছেলের মৃত্যুর খবর আলো নিভিয়ে দিল শহীদ জওয়ানের পরিবারে। গতকাল, রবিবার সেই শহীদ জওয়ানের কফিনবন্দি দেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। একদিকে যখন বর্ষীয়ান অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে গান স্যালুট দিয়ে বিদায় জানানো হয়, ঠিক তখন নদীয়ার গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায় শহীদ জওয়ান সুবোধ ঘোষের নিথর দেহ

পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী, শ্রীনগর থেকে দিল্লি হয়ে সেখান থেকে দমদম বিমানবন্দরে এসে পৌঁছয় শহীদ জওয়ানের কফিনবন্দি দেহ। তারপর সেখান থেকে পানাগর হয়ে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামের বাড়িতে। আগে থেকেই গ্রামে প্রস্তুতি ছিল। ঘরের ছেলের নিথর দেহ ট্রাকে করে গ্রামের ঢোকা মাত্রই সেই ট্রাক ঘিরে ধরে কয়েকশো মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সকলে শ্রদ্ধা জানান সুবোধ ঘোষকে। চোখের জলে ভেঙে পড়েন তাঁর মা ও স্ত্রী।

শহীদ জওয়ানের বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে একটি স্কুল মাঠে রাখা হয় তাঁর কফিনবন্দি দেহকে। সেখানেই তাঁকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য একটি অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়। একে একে সকলে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা জানানোর জন্য উপস্থিত ছিলেন রানাঘাটের সাংসদ মহুয়া মৈত্র। অবশেষে গান স্যালুট দিয়ে বিদায় জানানো হয় শহীদ জওয়ানকে।

প্রসঙ্গত, চার বছর আগে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন সুবোধ। স্ত্রীকে বলেছিলেন, সামনের মাসেই ছুটিতে বাড়ি আসবেন। কিন্তু, তা আর হয়ে উঠল না। ছুটিতে বাড়ি আসার আগেই কফিনবন্দি হয়ে বাড়ি এলেন তিনি। অকালে বাড়ির ছেলের প্রাণ চলে যাওয়ায় পরিবারে কান্নার রোল ওঠে। গত বছর আগে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া সুবোধের সংসারে একটি ছোট ছ’মাসের মেয়ে রয়েছে। যার আগামী মাসেই মুখে ভাতের অনুষ্ঠানে ছুটি নিয়ে বাড়ি আসার কথা ছিল শহীদ বাঙালি জওয়ানের। কিন্তু সেই আশা আর পূরণ হল না।

Related Articles

Back to top button