ইংরাজি নিয়ে কটাক্ষ মহিলার, বাংলা ভাষায় যোগ্য জবাব দিলেন ‘জুন আন্টি’
সন্ধ্যা হলেই দর্শকদের চোখ এখন সেঁটে যায় টিভির পর্দায়। রিমোটে আঙুলের আলতো স্পর্শ স্টার জলসা চ্যানেল এনে দেয় টিভির পর্দায়। ‘শ্রীময়ী’ ইন্দ্রাণী হালদার (Indrani haldar) এবং ‘জুন’ ঊষসী চক্রবর্তী ( ushashie chakraborty)-এর লড়াই দর্শকমহল উপভোগ করেন তারিয়ে তারিয়ে। ‘জুন আন্টি’-র চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের ভূয়সী প্রশংসা কুড়িয়েছেন ঊষসী। চলতি বছরের 17 ই ফেব্রুয়ারি ছিল ঊষসীর জন্মদিন। কিছুদিন আগেই পিতৃহীন হয়েছেন ঊষসী। তাই এই বছর নিজের জন্মদিন পালন করেননি তিনি।
নিজের জন্মদিন উপলক্ষ্যে ফেসবুকে নিজের মেয়েবেলার কিছু ছবি শেয়ার করেছেন ঊষসী। তার মধ্যে একটি ছবিতে কনের সাজে দেখা যাচ্ছে ছোট্ট ঊষসীকে। একসময় একরত্তি মেয়েদের বাবা-মায়েরা কনের সাজে সাজিয়ে মজার ছলে ছবি তোলাতেন। ঊষসীও তার ব্যতিক্রম নন। শৈশবেই মাকে হারিয়েছেন ঊষসী। বাবা কমিউনিস্ট নেতা শ্যামল চক্রবর্তী (Shyamal chakraborty) একমাত্র মেয়েকে একাই মানুষ করেছেন। শ্যামলবাবু ঊষসীকে কখনও মায়ের অভাব বুঝতে দেননি, বলে জানিয়েছেন ঊষসী। কিন্তু একসময় ঊষসীর সঙ্গে বাবার মতান্তর হওয়ায় ঊষসী আলাদা থাকতে শুরু করেন। পরবর্তীকালে বাবার শরীর খারাপ হওয়ায় বাবার কাছেই ফিরে আসেন ঊষসী। বাবার ইচ্ছা অনুযায়ী পিএইচডি-র পড়াশোনাও শুরু করেন তিনি। কিন্তু গত বছর করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান শ্যামল চক্রবর্তী। বাবার মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছিলেন ঊষসী। কিন্তু গত বছরেই তিনি পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। বাবার উদ্দেশ্যে তাঁর ডিগ্রি উৎসর্গ করেছিলেন ঊষসী।
বাংলার আসন্ন ভোটের মুখে টলিটাউন ও টেলিটাউনের তারকারা যখন একের পর এক রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ করছেন তখন ঊষসীও উঠে এলেন খবরের শিরোনামে। সম্প্রতি ঊষসী ইন্সটাগ্রামে নিজের ছবি শেয়ার করেছেন। তবে ছবিগুলিতে সবচেয়ে সবচেয়ে লক্ষ্যণীয় হল ঊষসীর লাল রঙের চুল ও লাল বর্ডার দেওয়া সানগ্লাস। নেটিজেনদের একাংশের স্বভাব তিলকে তাল বানানো। তা সেই স্বভাব অনুযায়ী, তাঁরা রটিয়ে দিলেন, এটা নাকি ঊষসীর বামফ্রন্টে যোগ দেবার ইঙ্গিত। কিন্তু ঊষসী ছবি শেয়ার করে ক্যাপশন দিয়ে লিখেছেন, সূর্যাস্তের আলো তাঁর কাঁধে এসে পড়েছে। ঊষসী কিন্তু সূর্যাস্তের আলো অর্থে তাঁর চুলের রঙকে বুঝিয়েছেন। কিন্তু সূর্যাস্তের প্রকৃত রঙ হলো কমলা। এবার হয়তো ক্যাপশন দেখে নেটিজেনরা ঊষসীর বিজেপি যোগের ইঙ্গিত দেবেন। যাই হোক, ঊষসীকে নতুন লুকে যথেষ্ট সুন্দরী লাগছে।
তবে দেবযানী চ্যাটার্জি (Debjani chatterjee) নামে এক নেট নাগরিক সম্প্রতি ঊষসীকে তাঁর ইংরাজি উচ্চারণ নিয়ে কটুক্তি করেছেন। ঊষসী মাতৃভাষা বাংলায় দেবযানীর কথার প্রত্যুত্তর দিয়ে বলেন তিনি সরকারী বাংলা মিডিয়াম স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। তাঁর বাবার আর্থিক ক্ষমতা ছিল না তাঁকে ইংরাজি মিডিয়াম স্কুলে পড়ানোর। ফলে ক্লাস সিক্স থেকে তিনি ইংরাজি পড়েছেন। তাছাড়া তাঁর বাবা ইংরাজি মিডিয়াম স্কুলে পড়ানোর বিরোধী ছিলেন। কিন্তু ইংরাজি উচ্চারণের কারণে ঊষসীর স্নাতকোত্তরে ফার্স্ট ক্লাস আটকায়নি বলে ঊষসী নিজের উচ্চশিক্ষার বর্ণনাও দিয়েছেন। এছাড়াও দেবযানীর উদ্দেশ্যে কিছু বাংলা শব্দের ইংরাজি অনুবাদও করে দিয়েছেন ঊষসী। ফেসবুকের জনপ্রিয় পেজ ‘বন্য ট্রোল’-এর অ্যাডমিন অপূর্ব (Apurba) যিনি ‘বন্য অপূর্ব’ নামে সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচিত তিনি ঊষসীর পোস্টটি নিজের ওয়ালে শেয়ার করে লিখেছেন, ইংরাজি শুধু একটি ভাষা, জ্ঞান নয়, এই কথাটি কিছু মানুষ ভুলে যান। ঊষসীকে সমর্থন করেছেন অপূর্ব ও অপর নেটিজেনরা।
ঊষসী সংবাদপাঠিকা হিসাবে ইন্ডাস্ট্রিতে এলেও পরবর্তীকালে অভিনয় করতে শুরু করেন। 2013 সালে ‘মিসেস সেন’ ফিল্মের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিনয় করা শুরু করেন ঊষসী। কিন্তু তাঁকে সাফল্য এনে দেয় ‘ব্যোমকেশ বক্সী’। এই ফিল্মে ‘সত্যবতী’-র চরিত্রে অভিনয় করে সাড়া ফেলে দেন ঊষসী।